আর্জেন্টিনা-১, সুইজারল্যান্ড-০

Slider খেলা গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ সারাবিশ্ব

d_maria012bg_518113881

স্পোর্টস রিপোর্টার
গ্রাম বাংলা ডেস্ক : অতিরিক্ত সময়ের ১১৮ মিনিটে অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার একমাত্র গোলে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। এই মাত্র গোল হলো। আর্ন্টিনা গোল দিলো।

নাইজেরিয়ার বিপক্ষে দুই গোল পান মেসি। অথচ ম্যাচে ২ দলের ফুটবলারদের মধ্যে গোলমুখে সবচেয়ে বেশি শট (৫টি) নিয়েও গোল অধরা থাকল ডি মারিয়ার কাছে। সবচেয়ে বেশি ৪টি গোলের সুযোগও তৈরি করেন তিনি। এরপরও তার নৈপুণ্য মন ভরাতে পারেনি ভক্তদের। অনেকে অভিযোগও তুলেছেন। ফলে কিছুটা হলেও হতাশা তাকে ঘিরে ধরবে, তা-ই স্বাভাবিক। গতকাল বল পায়ের জাদুতেই সব সমালোচনার জবাব দিলেন ডি মারিয়া। মুহূর্তের ম্যাজিকে পাল্টে দিলেন সবকিছুই। উদ্ভাসিত হলেন আপন মহিমায়। আর্জেন্টিনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়েই গোল পেলেন তিনি। তার বল পায়ের জাদুতেই রক্ষা হলো মেসি অ্যান্ড কোংয়ের। ডি মারিয়ার ঠাণ্ডা মাথার গোলে দলটির ব্রাজিল বিশ্বকাপ জয়ের মিশনও অক্ষত থাকল। সাও পাওলোতে শেষ ষোলোর ম্যাচে ডি মারিয়ার একমাত্র গোলে আর্জেন্টিনা ১-০ ব্যবধানে সুইজারল্যান্ডকে হারিয়ে উঠল কোয়ার্টার ফাইনালে।
নির্ধারিত নব্বই মিনিটে গোলশূন্য ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের শেষ মুহূর্তে গোল করে আর্জেন্টাইনদের হিরোতে পরিণত হন ডি মারিয়া। তার এই গোলে টাইব্রেকার টেনশনও করতে হয়নি ২ বারের চ্যাম্পিয়নদের। অথচ ওই সময়ে দুই দলই মানসিকভাবে প্রস্তুত হচ্ছিল শুটআউটের জন্য। অতিরিক্ত সময় শেষ হতে বাকি মাত্র ২ মিনিট। ডি মারিয়া ছিলেন অন্য চিন্তায়। কাউন্টার অ্যাটাকে লায়নেল মেসির চমৎকার পাস থেকে প্লেসিং শটে বল সুইসদের জালে ঢুকিয়ে দেন তিনি। তার এই গোলেই ১৯৮৬ সালের পর শেষ ষোলোর ম্যাচে ওপেন প্লেতে ইউরোপীয় দলকে হারানোর কৃতিত্ব দেখাল আর্জেন্টিনা। কোয়ার্টার ফাইনালে দলটি খেলবে বেলজিয়াম ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ম্যাচের জয়ী দলের বিপক্ষে।
ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর রেকর্ড মোটেও ভালো নয় আর্জেন্টিনার। সর্বশেষ ওপেন প্লেতে তারা ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে পশ্চিম জার্মানিকে হারায়। ফলে সুইসদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগেই বাড়তি স্নায়ুচাপ যোগ হয় আর্জেন্টাইন শিবিরে। সাও পাওলোতে গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর টেনশন আরো বাড়ল দলটির। এ জন্য দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকল আর্জেন্টিনা। এ সময় তাদের আক্রমণে কিছুটা সমন্বয়ও হয়। তবে সুইস গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় হতাশ হতে হয় আর্জেন্টাইনদের।
৬২ মিনিটে হিগুয়েনের চমৎকার হেড ফিক করে দলকে বিপদমুক্ত সুইস শটস্টপার বেনালিয়ো। এই গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় নিশ্চিত গোলবঞ্চিত হন লায়নেল মেসি। ৭৮ মিনিটে চমৎকার ড্রিবলিং করে চার ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে সুইস ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন বার্সেলোনা সেনসেশন। তবে তার নেয়া শট রুখে দেন বেনালিয়ো। দ্বিতীয়ার্ধের বাকি সময়টুকু বল পজিশনে এগিয়ে থেকেও কাক্সিত গোলের দেখা পেতে ব্যর্থ হয় আর্জেন্টিনা। ফলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অ্যাগুয়েরোর ইনজুরি আর্জেন্টিনার প্রথম একাদশে পরিবর্তন অপরিহার্য করে দেয়। সুযোগ পান ল্যাভেজ্জি। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে বদলি হিসেবে নেমে দারুণ খেলেন প্যারিস সেন্ট জার্মেই এই তারকা। ফলে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো আর্জেন্টিনার প্রথম একাদশে ল্যাভেজ্জিকে রেখেই দল মাঠে নামান সাবেলা। তবে তার নতুন কম্বিনেশনের দল হতাশ করল ভক্তদের। কেবল মেসিকেই দেখা গেল স্বরূপে। বার্সেলোনা সেনসেশন বল পায়ের স্বভাবসুলভ নড়াচড়ায় ব্যতিব্যস্ত রাখেন সুইস রক্ষণভাগ। যদিও গোলের প্রকৃত কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। উল্টো, গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরোর অসাধারণ দৃঢ়তায় নিশ্চিত গোলহজম থেকেও রক্ষা পেল দলটি!
২৮ মিনিটে চমৎকার দলীয় অ্যাটাক থেকে গোলই পেতে বসেছিল সুইসরা! আর্জেন্টাইন ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে স্ট্রাইকার জাকার নেয়া প্লেসিং শট চমৎকার দক্ষতায় রুখে দেন রোমেরো। পা দিয়ে বল কিয়ার করেন। বিরতির ৬ মিনিট আগে সুইসরা নষ্ট করে লিড নেয়ার সবচেয়ে সহজ সুযোগ। অফসাইড ট্র্যাপ ভেদ করে জোসিপ ঢুকে পড়েন আর্জেন্টাইন রক্ষণভাগে। তবে আসল কাজটাই করতে ব্যর্থ হন তিনি। তার নেয়া দুর্বল শট সহজেই আয়ত্তে নেন রোমেরো।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *