বাংলাদেশ ইনিংসে হারেনি এবং খেলা তৃতীয় দিনেই শেষ হয়নি- অ্যান্টিগা টেস্টে এখন পর্যন্ত এটাই বাংলাদেশের অর্জন। বড় ধরনের কোনো অঘটন না ঘটলে আজ চতুর্থ দিনেই খেলা শেষ হচ্ছে এবং ওস্টে ইন্ডিজ সহজেই ম্যাচটি জিততে যাচ্ছে। জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার মাত্র ৩৫ রান। আর বাংলাদেশের প্রয়োজন ৭ উইকেট।
শনিবার তৃতীয় দিনে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৫ রানে অল আউট করার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের টার্গেট দাঁড়ায় ৮৪ রান। আর তারা সংগ্রহ করেছে ৩ উইকেটে ৪৯ রান।
তবে ইনিংসের শুরুতেই তাদের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে লড়াই জমিয়ে তুলেছিলেন খালেদ আহমেদ। তবে উইকেটে থিতু হয়ে গেছেন দুই ক্যারিবীয় ব্যাটার জন ক্যাম্ববেল ও বনার। ফলে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে ক্যারিবীয়রা।
অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে শনিবার ১১২ রান দূরে থেকে টেস্টের তৃতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। দিনের শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। প্রথম সেশনেই মোট চার উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থাকা দুই বাঁহাতি ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হককে সাজঘরে পাঠান কাইল মায়ার্স। এরপর কেমার রোচ ফেরান লিটন দাস ও মাহমুদুল হাসান জয়।
দিনের শুরুতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ১৭ রানে বিদায় নেন শান্ত। মায়ার্সের সুইংয়ে ভুগতে দেখা যায় মুমিনুলকেও। তিনিও মায়ার্সের বলেই এলবির শিকার হন।
বছর জুড়ে ছন্দে থাকা লিটন দাস ওয়েস্ট ইন্ডিজে হতে পারলেন না হতাশার মুখ। রোচের করা স্টাম্পের বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলে আলগা শটে স্লিপে ক্যাচ দেন লিটন। ১৫ বলে ১৭ রানে শেষ হয় তাঁর ইনিংস।
এর একটু পরেই বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। গতকাল ব্যাটিংয়ে নেমে থিতু হয়ে যাওয়া জয় হুট করেই যেন মনোযোগ হারান। তিনিও উইকেটের পেছনে উইকেট উপহার দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। ১৫৩ বলে তিন বাউন্ডারিতে ৪২ রান করে ফেরেন জয়।
প্রথম সেশনে ২৯ ওভার খেলে ৬৫ রান তোলে বাংলাদেশ। এই সেশনেই মূলত ৪ উইকেট হারিয়ে বড় বিপদে পড়ে যায় সাকিবের দল। শেষ পর্যন্ত সোহানকে নিয়ে সাকিব নিজেই আবারও হাল ধরেন। সপ্তম উইকেটে উপহার দেন ১২৩ রানের জুটি। দুজনেই তুলে নেন ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি। এই জুটিতে ভর করেই দলীয় রান প্রায় আড়াইশ’র কাছাকাছি যায় বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথম ইনিংসে লিড থাকায় ক্যারিবীয়দের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৮৪ রানের।
ব্যাট হাতে ৬৩ রানের ইনিংস উপহার দেন সাকিব। ৯৯ বলে তার ইনিংসে ছিল ছয়টি বাউন্ডারি। তার সাথে উইকেটে থেকে ৬৪ রান করেন সোহান। ১৪৭ বলে তিনি হাঁকান ১১টি বাউন্ডারি।
বাংলাদেশকে দ্রুত থামাতে বল হাতে সবচেয়ে বেশি সাফল্য পান কেমার রোচ। ৫৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তিনি। এ ছাড়া তিন উইকেট নেন আলজারি জোসেফ। আর কাইল মায়ার্স নেন দুটি উইকেট।
এর আগে প্রথম ইনিংসেও হতাশা দেখে বাংলাদেশ। বরাবরের মতো ব্যর্থ হন ব্যাটাররা। এক সাকিব ছাড়া ব্যাট হাতে সবাই দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেন। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৩ রানেই অলআউট হয় বাংলাদেশ।
বিপরীতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম সেশনে স্কোরবোর্ডে ২৬৫ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বল হাতে মেহেদী হাসান মিরাজের কল্যানে ক্যারিবীয়দের তিনশর নিচে থামাতে পারে সাকিব আল হাসানের দল।