সিলেটে আরো ২ দিন বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। একইসাথে গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত) এ এলাকায় ২৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে আবহাওয়া অধিদফতরের কর্মকর্তা মো: শাহীনুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
এ সময় তিনি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ২৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী দুদিন অর্থাৎ ২০ জুন পর্যন্ত সেখানে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
মো: শাহীনুল ইসলাম আরো জানান, সারা দেশেই থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাতে বৃষ্টি বাড়তে পারে। বেশ কয়েকটি বিভাগে প্রবল বজ্রপাতসহ ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ মাসে প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ দিকে সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সাথে প্রবল বজ্রসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে অবস্থায় বলা হয়েছে, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।
শনিবার আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদের সই করা এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আজ (শনিবার) বিকেল ৫টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও প্রবল বজ্রপাতসহ ভারী (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতি ভারী (৮৯ মি.মি. বা তার অধিক) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।
টানা ভারী বর্ষণ এবং ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এ দুই জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহতম বন্যা দেখা দিয়েছে। লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বন্ধ হয়ে গেছে দুই জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ।
বেশিরভাগ এলাকার সঙ্গে সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আটকে আছে। প্রয়োজনীয় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে বন্যাদুর্গত এলাকায়। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে পানি প্রবেশ করায় সেবাদান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অসুস্থ অনেক মানুষকে যানবাহনের অভাবে হাসপাতালে নেওয়া যাচ্ছে না। শহর ও গ্রামের প্রায় সব সড়ক পানির নিচে ডুবে আছে।
এ অবস্থায় আক্রান্ত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটও বন্যার্তদের উদ্ধার ও খাদ্য সহায়তায় কাজ করছে। বন্যার কারণে এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।