গাজীপুর, ১৬ই জুন ২০২২: “বাসায় তো সব সময়ই খাই কিন্তু সবাই মিলে খেলে তবেই তো উৎসব হবে। তাই আমি আজ ফল নিয়ে এসেছি বন্ধুদের সাথে ভাগাভাগি করে খাবো বলে।” এভাবেই ফল উৎসব সম্পর্কে তার অনুভূতি ব্যক্ত করলো কচি-কাঁচা একাডেমিতে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ওমর ফারুক নিলয়।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া তাসনিম সৌমিতা,জান্নাতুন বিন বৈশাখী সারাহ ও মনিরা সুলতানা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছে, “অনেক অপরিচিত দেশি ফল আজ চিনলাম, এই ফলের রাজ্যে এসে অনেক প্রকার ফল খেলাম। ফল উৎসব নিয়ে আমরা খুবই এক্সাইটেড ছিলাম। বিশেষ করে যখন শুনলাম, বেস্ট টিম ঘোষণা হবে, তারপর থেকে ফলের উপকারিতা, বৈজ্ঞানিক নাম এবং এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন ফল নিয়ে অনেক স্টাডি শুরু করেছিলাম এবং রুম ডেকোরেশনে অনেক সময় দিয়েছি। সর্বোপরি এই ফল উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমাদের ভীষণ ভালো লাগছে।”
নানান প্রজাতির দেশি ফলের সাথে পরিচয় ও ফলের বিভিন্ন উপকারিতা শিক্ষার্থীদের জানানোর উদ্দেশ্যে আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে গাজীপুর সদর উপজেলাধীন ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটি পরিচালিত ইকবাল সিদ্দিকী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কচি-কাঁচা একাডেমি ও নয়নপুর এন এস আদর্শ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে বিদ্যালয়ের উদ্যোগে ‘ফল উৎসব-১৪২৯’ এর আয়োজন করা হয়।
ফল উৎসবে কাঁঠাল, আম, জাম, লিচু, আনারস, কাঠ লিচু, কলা, পেয়ারা, লটকন, করমচা, অরবরই, ডালিম, কামরাঙা, জামরুল, তাল, মালটা, লেবু, জাম্বুরা, বরই, নারিকেল, আমড়া, ডেউয়া, দেশি খেজুর, দাতোই, সফেদা, বেল, আমলকি, তেঁতুল, বাঙ্গি, তরমুজ, গাব, পেঁপে, বিলিম্বি ও ড্রাগন ফলসহ ৩৫ প্রজাতির ফল প্রদর্শনীর পাশাপাশি অতিথি এবং শিক্ষার্থীদের ফল কেটে খাওয়ানো হয়।
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে যখন জনজীবন অতিষ্ঠ, ঠিক তখনই প্রশান্তি ও সুখের পরশ নিয়ে প্রকৃতিতে হাজির হয় মধুমাস জ্যৈষ্ঠ। এ সময় বাহারি রং-বেরঙের মিষ্টি ও সুস্বাদু ফল পাওয়া যায়। দেশি নানান প্রজাতির ফলে সুশোভিত হয় চারিদিক। সব ফলের মধ্যেই পানির পরিমাণ বেশি থাকে। সেই কারণে গরমের সময় শরীরের পানিশূন্যতা পূরণে ফল দারুণভাবে সহায়তা করে। ফলের মধ্যে প্রচুর খাদ্যশক্তি থাকে, যা শরীরের ভেতর থেকে ক্ষতিকর চর্বি বের করে দেয়, তাই ফল সবার জন্য ভীষণ উপকারী। পুষ্টি ও মানের দিক থেকেও সব ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং খনিজ পদার্থ থাকে।
বর্ণিল এই আয়োজনে ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি জনাব আব্দুর রহমান। ফল উৎসব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘’ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যে খুবই উপকারী। প্রতিটি মানুষের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যেকোনো ধরনের একটি ফল অবশ্যই থাকা উচিত।”
অনুষ্ঠান সভাপতি প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, “ঋতু বৈচিত্র্যময় আমাদের দেশে বিভিন্ন ঋতুতে যেসব ফল পাওয়া যায় সেগুলোকে ঐ সময়ের নানান রোগের অ্যান্টিবায়োটিক বলা হয়। তাই ঋতু-অনুযায়ী ঐ ফল খাওয়া খুব জরুরি।”
ফল উৎসব উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রভাষক তৌফাজ্জল হোসেন বলেন, “জাঙ্ক ফুড ও অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে বিরত রাখা এবং পুষ্টিমানসম্পন্ন নানা ধরনের দেশি ফলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এই ফল উৎসবের আয়োজন করা হয়।”
ফল উৎসবের উদ্বোধনকালে কচি-কাঁচা একাডেমির প্রধান শিক্ষক জনাব আফরোজা খানম বলেন, ‘এরকম আয়োজন একসঙ্গে বসে আমরা যখন উপভোগ করি তখন আনন্দ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। আমি আশা রাখি, এ উৎসব আগামী বছর আরও বড় পরিসরে আয়োজন করতে পারব।’
উল্লেখ্য, ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটি প্রতিবছর মৌসুমি ফল উৎসবের আয়োজন করে আসছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি