সারা বিশ্বে গাধা উৎপাদনের সংখ্যায় পাকিস্তানের অবস্থান এখন তৃতীয়। প্রথম চীন ও দ্বিতীয় আফ্রিকার দেশ ইথোপিয়া। সম্প্রতি পাকিস্তানের ২০২১-২২ অর্থনৈতিক সমীক্ষায় এ কথা বলা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২১-২২ সালে পাকিস্তানে গাধার সংখ্যা বেড়ে ৫৭ লাখে দাঁড়িয়েছে। আগের বছর এটা ছিল ৫৬ লাখ। তবে ভেড়া, মহিষ, ছাগল পালনেও পিছিয়ে নেই পাকিস্তান। দেশটিতে ৪.৩৭ কোটি মহিষ, ৩.১৯ কোটি ভেড়া এবং একই সংখ্যক ছাগল রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ১১ লাখ উট, ৪ লাখ ঘোড়া ও ২ লাখ খচ্চর। তবে ২০১৭-১৮ সাল থেকে তাদের সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
পাকিস্তানের ২০২১-২২ অর্থনৈতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, সরকার দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন করে মনোযোগ দিচ্ছে। বর্তমানে পাকিস্তানে ৮০ লাখেরও বেশি গ্রামীণ পরিবার গবাদিপশু উৎপাদনে নিয়োজিত।
গত বছর জাতীয় পরিষদের বাজেট অধিবেশনে কঠোর বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিলেন ইমরান খান। তার আমলেই পাকিস্তানে গাধার এই বাড়বাড়ন্ত। ফলে ইমরান বিরোধীরা ‘ডাঙ্কি রাজা কি সরকার নেহি চালেগি’ বলে স্লোগান তুলেছিল পাক সংসদে।
তবে পাক অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল সম্প্রতি যে সমীক্ষা প্রকাশ করেছেন তাতে দেখা যায়, পাকিস্তানের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ইমরান খান সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্রুত বেড়েছে। দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকা সত্ত্বেও জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ৫.৯৭ শতাংশ ধরা হয়েছে। যেভাবে গাধার সংখ্যা প্রতিবছর এক লাখ করে বাড়ছে, তাতে স্পষ্ট যে ঋণে জর্জরিত দেশটি এখন প্রাণীসম্পদ রপ্তানির দিকে আগের চেয়েও বেশি মনোযোগ দেবে।
পাকিস্তানের জিডিপিতে যদি কৃষির অবদান ৬১.৯ শতাংশ হয়, তবে প্রাণীসম্পদের অবদান ১৪ শতাংশ। এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি একসময় পুরোপুরি প্রাণীনির্ভর ছিল। বিশেষত, ভারতের কৃষি অর্থনীতিতে গরুর একটি বড় ভূমিকা ছিল। তবে ভারত-পাকিস্তান দুই প্রতিবেশি দেশের প্রাণিসম্পদ ও পশুপালনে রয়েছে আশ্চর্য বৈপরীত্য। যেখানে পাকিস্তান তার ক্ষয়িষ্ণু অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে গাধার উৎপাদনে জোর দিচ্ছে, সেখানে ভারতে এই প্রাণীটির সংখ্যা ক্রমশ কমছে।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবাদিপশুর মোট মূল্য সংযোজন (গ্রস ভ্যালু এডিশন) ৫,২৬৯ বিলিয়ন রুপি (২০২০-২১) থেকে বেড়ে ৫,৪৪১ বিলিয়ন রুপি (২০২১-২২) হয়েছে।