কিশোরগঞ্জ: গ্রামের নাম কাজলা। ’কাজলা’ মানে কাজলকালো রঙ। অন্য আট-দশটা গ্রামের মতোই সবুজ গ্রাম। তবে এই গ্রামে আছে কাজলকালো এক রাজা। রাজার ওজন ৩০ মণ। নাদুশ-নুদুশ শরীর। পরিপাটি সাজ। চাল-চলন রাজার মতোই। তাই শখ করে তার নাম রাখা হয়েছে ’ভাটির রাজা’।
কাজলা গ্রামটি ভাটি এলাকায়, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দামিহা ইউনিয়নে। ওই গ্রামের এক খামারি মো: মতিউর রহমান। তার গোয়াল আলোকিত করে ভাটির রাজার বসবাস। তবে ’ভাটির রাজা’ যেনতেন গরু নয়।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর এবং বড় গরু এটি। ভাটির রাজাকে দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত লোক। দূর থেকে আসছেন ক্রেতারাও। মালিক দাম হাঁকছেন ১২ লাখ টাকা।
জানা গেছে, সামনে কুরবানির হাটে বিক্রি করতে খামারি মতিউর রহমান এই গরুকে পালছেন। গরুটি ফ্রিজিয়ান (ব্ল্যাকবি অস্ট্রেলিয়ান) জাতের। সাড়ে তিন বছর বয়স। দাঁত আছে ছয়টি। একে খাওয়াতে হয় রাজার মতো করেই। প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ কেজি খাবার খায়। এর মধ্যে আছে কাঁচা ঘাস, শুকনো খড়, গমের ভূষি, ধানের কুড়া।
খামারি মতিউর রহমান জানান, স্থানীয় এক কৃষকের থেকে আড়াই বছর আগে এক বছর বয়সী ‘ভাটির রাজা’কে কিনেছিলেন তিনি। কেনার পর একে দেশীয় পদ্ধতিতে মোটা-তাজা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন।
প্রয়োজনমতো খাবার ও পরিচর্যা দেন। গত বছর ওজন ছিল এক হাজার কেজি। তখন করোনার কারণে গরুটিকে বাজারে নেয়া হয়নি। এ বছর ওজন ১২ শ’ কেজি ছাড়িয়ে গেছে। প্রাণী চিকিৎসকদের সহযোগিতায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ফিতার মাপে ওজন নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই কেজি করে ওজন বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন খামারি। ভালো দাম পেলে এই রাজাকে বিক্রি করে দেয়া হবে। যারা কিনতে চান, তাদেরকে ‘০১৭৮০৪৬৮২৯৫’ নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন মালিক।
জেলা প্রাণিসম্পদক কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম জানান, ভাটির রাজার মালিক একজন সফল উদ্যোক্তা। ‘আহমেদ এগ্রো’ নামে তার খামার রয়েছে। এ খামারেই রাজাকে পেলে-পুষে বড় করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় নিয়মিত রাজার দেখভাল করেছে। রাজাকে পালনে খামারি মতিউর রহমান কোনো ধরনের হরমোন বা স্টেরয়েড ব্যবহার করেননি। তাই রাজার মাংস সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত এবং গোশত সুস্বাদু হবে।