মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেওয়া রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে মিন্টুর হারের পর বৃহস্পতিবার বিএনপির পক্ষ থেকে একথা জানানো হয়।
‘আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের’ আহ্বায়ক অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে এসে সাংবাদিকদের বলেছেন, “ঢাকা উত্তরে আমরা তাবিথ আউয়ালকে প্রার্থী করছি, দক্ষিণে মির্জা আব্বাস। বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি এতে সমর্থন দিয়েছেন।”
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের প্রার্থী হিসেবে বিএনপি নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। কয়েকদিন আগেই এই ফোরাম গঠিত হয়।
ঢাকা দক্ষিণে ইতোমধ্যে সমর্থন দেওয়া হয়েছে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাসকে। সেখানে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের সাঈদ খোকন।
ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে লড়ছেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আনিসুল হক। এখন তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসছেন এফবিসিসিআইয়ের আরেক সাবেক সভাপতি মিন্টুর ছেলে তাবিথ।
২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিন্টুর সঙ্গে তার ছেলে তাবিথও মনোনয়নপত্র জমা দেন।
বাছাইয়ের সময় তাবিথের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা হলেও রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহ আলম বিএনপি নেতা মিন্টুর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। তার মনোনয়নপত্রে সমর্থক সিটি করপোরেশনের ভোটার ছিলেন না।
এরপর নির্বাচন কমিশনে আপিল করে হেরে হাই কোর্টে যান মিন্টু। সেখানে হারের পর যান আপিল বিভাগে, কিন্তু বৃহস্পতিবার তার সেই আবেদনও খারিজ হয়ে যায়।
দক্ষিণে মির্জা আব্বাসকে সমর্থন জানালেও উত্তরে মিন্টুর জন্য অপেক্ষায় ছিল বিএনপি। কিন্তু ভোটে টিকে থাকার তার সব সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর অরাজনৈতিক তাবিথকে বেছে নিল বিএনপি।
ঢাকা উত্তরে বিএনপিঘনিষ্ঠ দল বিকল্প ধারার সাংগঠনিক সম্পাদক মাহী বি চৌধুরীও প্রার্থী হয়েছেন। বিএনপির সাবেক এই সংসদ সদস্য বিএনপির সমর্থনও চেয়েছিলেন, তবে তা শেষ পর্যন্ত হল না।
মিন্টুর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পর ছেলে তাবিথকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও দেখা করেছিলেন মিন্টুর স্ত্রী নাসরিন আউয়াল। তখনই তাকে ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে বলা হয়েছিল।
তাবিথের বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপের অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে দিয়েছিল সোনালী ব্যাংক। কিন্তু এই নির্বাচনের আপিল কর্তৃপক্ষ ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির ওই আবেদন খারিজ করে দেন।
মাল্টিমোড গ্রুপের চেয়ারম্যান মিন্টুর ছেলে তাবিথ ওই গ্রুপেরই উপ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি ১৭টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি তিনি।
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হলফনামায় তাবিথ নিজের বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন সোয়া কোটি টাকা।
তার অস্থাবর সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে ১৪ কোটি ৮১ লাখ টাকার বন্ড ও শেয়ার। অন্যান্য খাতে রয়েছে আরও ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকার সম্পদ। তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ৬০ ভরি স্বর্ণ।