চিত্রনায়িকা মৌসুমীর সঙ্গে ২৭ বছরের সংসার বাইরের মানুষ ভাঙার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন চিত্রনায়ক ওমর সানী। এ ছাড়া তিনি তার সংসারে কোনো ভুল বোঝাবুঝি চান না বলেও জানান। আজ সোমবার বিকেল ৪টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে এ কথা বলেন ওমর সানী।
ফেসবুক লাইভে ওমর সানী বলেন, ‘আপনারা বুঝতেই পারছেন একটা বিশেষ কারণে আমি লাইভে আসছি। কারণটা হচ্ছে দেখুন আমার ৩১-৩২ বছরের ফিল্ম ক্যারিয়ারে আজ অব্দি কেউ কোনো আঙ্গুল দিতে পারবে না। বিশেষ করে আমার স্ত্রীকে আমি বিয়ে করেছি ২৭ বছর। আমি গতকাল শিল্পী সমিতিতে একটা অ্যাপ্লাই (আবেদন) করেছিলাম জায়েদ খানের বিরুদ্ধে। সেটাতে আমি এখনও অটল।’
সানী বলেন, ‘আমি লাইভে কেন আসলাম আপনাদেরকে আগে এটা ক্লিয়ার (পরিস্কার) করে দেই। আমার চাওয়া পাওয়ার বাংলা চলচ্চিত্রে কিচ্ছু নেই। হিট, সুপার হিট, বাম্পার হিট, নাম্বার ওয়ান এই ধরনের আল্লাহ আমাকে দিয়েছে। চলচ্চিত্রের মানুষ দিয়েছে প্লাস দর্শকরা দিয়েছে। আমি কোনো বিষয়ে ইউটিউব বা কোনো চ্যানেলে আসতে আগ্রহী নই। ক্যামেরার সামনে আসব এর জন্য আমি ফেসবুকটাকেই বেছে নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এখান থেকে আমি আপনাদের সবাইকে বলে দিচ্ছি, আমি অনেক ফোন পাচ্ছি। আমি একটু সিক ফিল (অসুস্থ অনুভব) করছি। কেউ আমাকে ভিডিও প্লাস অডিওতে যা কিছু বলার আমি অলরেডি বলে দিয়েছি। এখন যেটা আমি বলব, তার বিষয়ে আমি যে কথাগুলো বলেছিলাম সেটা একদমই সত্য কথা। বিশেষ করে তার গাড়ির বিষয়ে আমার এবং আমার ছেলে ফারদিনের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ এভিডেন্স (প্রমাণ) আছে।’
নিজের স্ত্রী সম্পর্কে ওমর সানী বলেন, ‘আর মৌসুমী সম্পর্কে যদি আমি বলি, সে আমার স্ত্রী। আমার সন্তানের মা। সে গর্জিয়াস মা। আমি তাকে অসম্মান করে একটি কথাও বলব না। কি ভেবে সে জায়েদ খানকে ভালো বলেছে। উনার সম্পর্কে বাংলাদেশে চলচ্চিত্র জানে, বর্তমান ক্যাবিনেট জানে, প্রযোজক সমিতির ক্যাবিনেট জানে এবং পরিচালক সমিতির ক্যাবিনেট জানে, দর্শক জানে এবং সবাই জানে। আমি এ ব্যাপারে কথা বলব না।’
সানী বলেন, ‘দয়া করে আমার এই ভাষ্যটুকু ফেসবুক থেকে আপনারা যারা দেখছেন তারা এটাকে স্ট্রিক্টলি আমি বলে দিয়েছি আমার গার্ডিয়ান হিসেবে আমার ছেলে ফারদিন ও মেয়ে ফাইজা তারা অবশ্যই আপনাদেরকে ক্লিয়ার করবে। আমার গার্ডিয়ান হিসেবে আমার ছেলে ফারদিনকে আমি মেনে নিলাম এবং আমার ফ্যামিলির ইজ্জত মানে আমার ইজ্জত, আমার স্ত্রীর ইজ্জত মানে আমার ইজ্জত, আমার ছেলে-মেয়ের ইজ্জত মানে আমার ইজ্জত।’
এক সময়ের জনপ্রিয় এ চিত্রনায়ক বলেন, ‘আমি চাই না এই ২৭ বছরে এসে কোনো ধরনের কোনো ভুল বোঝাবুঝি ফ্যামিলির মধ্যে হোক। কিন্তু বাইরের মানুষ এসে যেভাবে ভাঙার চেষ্টা করছে, আপনারা নিজেরাই জানেন। আমি তার সম্পর্কে আর কিছুই বলব না। এটার উত্তর আমি এভাবেই দিয়ে দিলাম।’
সাংবাদিক ও দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, ‘দয়া করে আপনারা যারা সাংবাদিক ভাইরা আছেন আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ আমাকে আর ফোন করার কোনো দরকার নেই। এই ভিডিও দেখে আপনারা জেনে নেবেন। আর দর্শক যারা আছেন তারা দয়া করে কেউ বাজে মন্তব্য করবেন না মৌসুমীকে নিয়ে, বাজে মন্তব্য করবেন না আমাদেরকে নিয়ে। আমাদের যা কিছু বলার আমাকে নিয়ে বলবেন। আমি মাথা পেতে নেব। বিশেষ করে আপনারা বুঝে গেছেন জায়েদ খান কি! অনেকে আছে ভাইরাল হওয়ার জন্য অমুক বলে তমুক বলে।’
সানী বলেন, ‘আল্লাহ মাফ করুক, এই বাংলা চলচ্চিত্রে আল্লাহ আমাকে এত বড় ভাইরাল করে দিয়েছে যে গত ত্রিশ বছরে সেটা নিয়েই আমি আছি। সাংবাদিক ভাইদের কাছে আমার অনুরোধ আমার এখান থেকে সমস্ত কিছু নিয়ে নেবেন। আর আমার ছেলে ফারদিন, ফাইজা আমার গার্ডিয়ান তারাই বলে দেবে। ভালো থাকবেন, আমার জন্য দোয়া করবেন। মূলত আমি একজন কার্ডিয়াক পেশেন্ট (হৃদ্রোগে আক্রান্ত)। আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ রাখে এবং নামাজের মধ্যে রাখে। ইনশাল্লাহ আমিও আপনাদের জন্য দোয়া করি। আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।’
সবশেষে ওমর সানী বলেন, ‘আমি কখনোই কোনো খারাপ মানুষের সঙ্গে নেই এবং আমি আমার পরিবারের সঙ্গে থাকতে চাই। আমার ছেলে-মেয়ে, আমার স্ত্রী, সন্তানের সঙ্গে থাকতে চাই। ভালো থাকবেন সবাই। আমি এখন প্রচণ্ড রকম ফিল করি আমার শালি (শ্যালিকা), আমার শাশুড়ি, জিয়া, স্নিগ্ধা আমেরিকাতে আছে। আমি তাদের শ্রদ্ধা জানাই। আমার বোন বকুল আপা, আমার ভাই ইকবাল ভাই এবং সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারি এবং ঈমানের সঙ্গে বেঁচে থাকতে পারি। আর কেউ কোনো বাজে মন্তব্য করবেন না। কোনো যদি বাজে মন্তব্য করতে হয় আমাকে নিয়ে করেন।’