বিয়েবাড়িতে এক তরুণীর সঙ্গে কথা বলায় দুই যুবককে ন্যাড়া করে মাথায় আলকাতরা মাখিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য সায়েম গাজীর বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার বিকেলে পটুয়াখালীর গলাচিপায় চর বিশ্বাস ইউনিয়নের চর মহিউদ্দিন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মঙ্গলবার উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চর আগস্তির নূরু সরদারের মেয়ে মুক্তার বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। চর মহিউদ্দিন নমো স্লুইস গেট সংলগ্ন আবাসনে বিয়ের অনুষ্ঠানের খাবার খাওয়ানো হয়। ওই সময় বিয়ে বাড়িতে যান তুহিন ও কালু গাজী নামের দুই যুবক। সেখানে দুপুরে খাওয়ার পরে তারা পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে কথা বলেন। বিষয়টি বিয়ে বাড়ির লোকজনের মধ্যে জানাজানি হলে মেয়ের ভাই ও স্থানীয়রা দুই যুবককে ধরে ইউপি সদস্য মো. সায়েম গাজীর অস্থায়ী কার্যালয় নমো স্লুইস গেট বাজারে নিয়ে যান।
পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জনসম্মুখে ইউপি সদস্য সায়েম গাজীর নির্দেশে মাথা ন্যাড়া করে আলকাতরা মাখিয়ে গ্রামছাড়া করে। পরে লোকলজ্জার ভয়ে তারা বাগানে লুকিয়ে ছিলেন। পরে পরিবারের লোকজন তাদের উদ্ধার করেন।
ভুক্তভোগী দুই যুবক বলেন, ‘মেয়েটি আমাদের পূর্ব পরিচিত। তাই বিয়ে বাড়িতে তার সঙ্গে আমরা কথা বলেছিলাম। এটা দেখে মেয়ের বড় ভাইসহ আরও কয়েকজন আমাদের ধরে সায়েম গাজীর কাছে নিয়ে যায়। তারা আমাদের মারধর করে মাথার চুল কামিয়ে আলকাতরা লাগিয়ে গ্রামছাড়া করে। আমরা লোকলজ্জার ভয়ে এখন পালিয়ে থাকি। আমরা সমাজে কিভাবে বাঁচব? আমাদের ভবিষ্যৎ কী?’
মেয়ের ভাই জানান, ওরা মোবাইলে বিভিন্ন সময় মেয়েটিকে বিরক্ত করতো। বিয়ে বাড়িতে তাদের পেয়ে আমরা মেম্বারের কাছে নিয়ে গেলে সালিসের মাধ্যমে সেলুন থেকে মেশিন দিয়ে তাদের ন্যাড়া করে সতর্ক করা হয়। তবে আলকাতরা কে বা কারা লাগিয়েছে আমার জানা নেই।
ন্যাড়া করার বিষয়ে স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. হাসান সরদার বলেন, কোন আইনে একজন ইউপি সদস্য জনসম্মুখে দুজন যুবকের মাথা ন্যাড়া করে আমার জানা নেই। যারা এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবু সায়েম বলেন, ‘কোনো সালিস বৈঠক হয়নি। আমি কারও মাথা ন্যাড়া করে দেয়নি। আর যদি এমনটি হয়ে থাকে তবে তার ভিডিও ফুটেজ কোথায়?’
গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।