চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পর হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড নিয়ে নতুন করে আলোচনা চলছে। রাসায়নিক পদার্থ হওয়ায় ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। বিএম ডিপোতে থাকা ৩৩টি কনটেইনার রাসায়নিক উৎপাদিত হয়েছে একই মালিকের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে।
হাটহাজারীর দক্ষিণ পাহাড়তলী ঠাণ্ডাছড়ি এলাকায় অবস্থিত আল-রাজি কেমিক্যাল কমপ্লেক্স লিমিটেড স্মার্ট গ্রুপের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বিএম ডিপোও একই মালিকের। গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ।
জানা গেছে, আল-রাজি প্রতিষ্ঠানটিকে বেশ কয়েকটি শর্তে রাসায়নিক উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। এর মধ্যে প্রধান একটি শর্ত ছিল বছরে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ছাড়া অন্য কোনো রাসায়নিক উৎপাদন করা যাবে না। এছাড়া উৎপাদন সীমিত রাখতে হবে এক হাজার মেট্রিক টনে।
কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী বিগত দুই বছরে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় নয় হাজার মেট্রিক টন হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড রপ্তানি করেছে। অথচ শর্ত অনুযায়ী দুই হাজার টনের বেশি উৎপাদনের কথা নয়।
চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মো. ফখরুল আলম বলেন, গত তিন বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আটটি প্রতিষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১৩ কোটি তিন লাখ ৯৩ হাজার কেজি হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে ৮৬ লাখ ৬২ হাজার ২২০ কেজি রপ্তানি করেছে আল রাজি।
নেই ইটিপি, নবায়ন হয়নি পরিবেশ ছাড়পত্র
পরিবেশ ছাড়পত্র নিয়ে আল রাজি কেমিক্যাল কমপ্লেক্স হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড উৎপাদন শুরু করলেও বসেনি ইটিপি। অথচ কারখানা অনুমোদনের অন্যতম শর্ত ছিল ইটিপির মাধ্যমে তরল বর্জ্য পরিশোধন করতে হবে। ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি এর অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। প্রতিবছর পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়ন করতে হয়; সেই হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি আবেদন করেছে কিন্তু ছাড়পত্র দেয়নি পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়নের আবেদন করেছিল। কিন্তু ইটিপি চালু না করায় নবায়ন করা হয়নি। এছাড়া ইটিপির যে নকশা জমা দিয়েছে সেখানেও বেশকিছু ত্রুটি রয়েছে।