আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, উল্টোপাল্টা কথা না বলে অতীত থেকে শিক্ষা নিন, না হলে আপনাদের পতন অনিবার্য।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সভায় তিনি এ সতর্কবার্তা দেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী এবং জাগপা প্রতিষ্ঠাতা শফিউল আলম প্রধানের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘আগ্রাসন প্রতিরোধ ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা। প্রধান অতিথি হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামের ভুল বানান ব্যানারে দেখা যায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি ওবায়দুল কাদেরকে সতর্ক করতে চাই। আপনারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন না। এবার একটু শিক্ষা নেন।
১৯৭৪ সালে আওয়ামী শাসনে দুর্ভিক্ষের কথা স্মরণ করিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তখন খাদ্যশস্যের দাম বেড়েছিল, হাহাকার দেখা দিয়েছিল। আজকে আবার খাদ্যশস্যের দাম বাড়ছে। খাদ্যের দাম বাড়ছে। মানুষের হাহাকার শুরু হয়ে গেছে।’
ওবায়দুল কাদেরকে উল্টোপাল্টা কথা না বলার পরামর্শ দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে আসুন। গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন। মানুষকে কথা বলতে দিন। অধিকার প্রয়োগ করতে দিন। তা না হলে আপনাদের যে পরিণতি হবে সেটি হবে ভয়ানক। সেই ভয়ানক পরিণতি যাতে না হয় তার জন্য এখন থেকে জনগণের অধিকারকে ফিরিয়ে দেন। মানুষ হত্যা বন্ধ করেন। মিথ্যা মামলা দেয়া বন্ধ করেন। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন। তা না হলে আপনাদের কোনোদিন মুক্তি হবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অতীতের মতো আবারো খাদ্যের দাম বাড়ছে। দেয়ালের লিখন পড়ুন নয়তো সরকারের ভয়ানক পরিণতি হবে। গুম-খুন নির্যাতনের পথ থেকে সরে আসুন। নয়তো পতন অনিবার্য।
দব্যমূল্যের ঊর্ধগতির কারণে দেশের মানুষ আজ হাহাকার করছে। তাই ইতিহাস থেকে ওবায়দুল কাদেরকে শিক্ষা নিয়ে দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
সেইসাথে দেশের সকল বাম-ডান রাজনৈতিক দলকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার সহজেই বিদায় হবে না। তাদেরকে বিদায় করতে হবে। তার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। আবারো একটা যুদ্ধ করে দেশের মানুষকে মুক্ত করতে হবে। এই সরকার বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে নির্বাচন ব্যবস্থা সব ধ্বংস করেছে। একক নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তাই এদের অধীনে আর কোনো নির্বাচন না।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, সরকারের শুধু কারসাজি নয়, তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততায় চালের দাম বেড়েছে। সরকারের মন্ত্রীও স্বীকার করেছেন যে, সিন্ডিকেটের কারণে দাম বাড়ছে।
জাগপার সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাদাত এর সঞ্চালনায় সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপি একাংশের সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ বক্তৃতা করেন।