সেতু উদ্বোধন ঘিরে ডিসিদের চিঠি: ‘পদ্মার ঢেউ’ আছড়ে পড়বে হাতিরঝিলে

Slider সারাদেশ


জাঁকজমকভাবেই আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এ জন্য সরকারের সব স্তরেই চলছে জোরালো প্রস্তুতি। চ্যালেঞ্জ নিয়ে তৈরি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ও দেশবাসীকে এটি ব্যাপকভাবে জানাতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও এর সঙ্গে যুক্ত করছে সরকার। তার অংশ হিসেবে গত বুধবার ৬৪ জেলা প্রশাসককেই (ডিসি) চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এমনকি আজ শুক্রবার বিকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডিসিদের সঙ্গে বৈঠকও ডাকা হয়েছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী প্রস্তুতি ও কী কী কার্যক্রম হাতে নেওয়া

হবে- সভায় সে বিষয়েই দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র তা নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পদ্মাপারে হলেও সেটি সারাদেশেই একযোগে উদযাপন করা হবে। আর সেটি সফলভাবে উদযাপনের জন্য ৬৪টি জেলার সব জেলা প্রশাসককেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অনুরোধ জানিয়েছে সেতু বিভাগ। এ ছাড়া রাজধানীতে পদ্মা সেতুর ব্র্যান্ডিং এবং উদ্বোধনের দিন হাতিরঝিলে অনুষ্ঠান পরিচালনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঢাকার ডিসিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখা থেকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে। চিঠির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সেতু বিভাগের সচিব এবং আট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারদেরও পাঠানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. সাবিরুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ও করণীয় নিয়ে আট বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ ডিসির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে শুক্রবার বিকালে মিটিং হবে।’

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী দিনে জমকালো অনুষ্ঠান হবে রাজধানীর হাতিলঝিলে। আলোকিত হবে পুরো হাতিরঝিল এলাকা। ভিডিও প্রদর্শনীতে থাকবে পদ্মা সেতুর ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনেও থাকছে প্রচার। এ ছাড়া হাতিরঝিলের এম্পি থিয়েটারে আয়োজন করা হচ্ছে কনসার্টও। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত বৃহৎ এই সেতুর বিষয়টি দেশবাসীর পাশাপাশি বিশ^কে জানানোর আয়োজনেও কমতি রাখছে না সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ জুন সকালে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুটি উদ্বোধন করে গাড়িতে চড়েই শরীয়তপুরের জাজিরাপ্রান্তে যাবেন। সেখানে আরেক দফা আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেবেন। পরে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে জনসভায় বক্তব্য দেবেন। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) কর্মকর্তারা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। উদ্বোধনের আগে তারা আরও কয়েক দফা পরিদর্শনে যাবেন। সেতু বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতে সেতু বিভাগ ১৮টি উপকমিটি গঠন করেছে। মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সমাজের বিশিষ্টজন, ঢাকাস্থ বিভিন্ন মিশনের কূটনৈতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হবে সেই অনুষ্ঠানে। গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় ৬৪ জেলায় একসঙ্গে সেতুর রেপ্লিকেশন করা হবে। আর সেই উদ্বোধন অনুষ্ঠান হবে সুপার গর্জিয়াস।

বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাকে ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করবে। সেতুটির মূল দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। আর দুই প্রান্তের ৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার উড়ালপথ নিয়ে মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার। ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ের চ্যালেঞ্জ নিয়েই ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *