শুক্রবার হজ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

Slider জাতীয়


শুক্রবার এ বছরের হজ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (০৩ জুন) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে রাজধানীর আশকোনা হজক্যাম্পে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হজ ক্যাম্পের অনুষ্ঠানে ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী উপস্থিত থাকবেন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই (৯ জিলহজ) সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। করোনা মহামারিতে গত দুই বছর বাংলাদেশে থেকে কেউ হজে অংশ নিতে পারেননি। এবার হজে সারা বিশ্বের ১০ লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। হজযাত্রীর এ সংখ্যা কোটা অনুযায়ী বিভিন্ন দেশের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।

এবছর নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করে সৌদি সরকার। তবে কমিয়ে দেওয়া হয় হজযাত্রীর সংখ্যাও। এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জনসহ সর্বমোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব গমনে সুযোগ পাচ্ছেন। এবার ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের হজে অংশগ্রহণের সুযোগ দিচ্ছে না সৌদি আরব সরকার।

এর আগে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ বাংলাদেশ থেকে হজে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেতেন।

এবছর হজের ব্যয় বিগত বছরের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। এ বছর সরকারিভাবে দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার সর্বনিম্ন প্যাকেজ ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর অন্য প্যাকেজে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা খরচ হবে।

বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য সাধারণ প্যাকেজ মূল্য ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা নির্ধারণ করেছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। পরে আবারও হজের উভয় প্যাকেজের জন্য ব্যয় ৫৯ হাজার টাকা করে বাড়ানো হয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সৌদি সরকার মোয়াল্লেম ফি বাড়ানোর কারণে এ খরচ বেড়েছে। তবে হজের কোনও প্যাকেজেই কোরবানির খরচ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এ জন্য প্রত্যেক হজযাত্রীকে অতিরিক্ত ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা ব্যয় করতে হবে।

হজ প্যাকেজের টাকার পার্থক্য হয় সুযোগ সুবিধার ভিত্তিতে। এছাড়া কাবা থেকে কাছাকাছি হোটেলের ভাড়া বেশি হওয়ায় হজ প্যাকেজের পার্থক্য হচ্ছে। সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১-এর হজযাত্রীরা পবিত্র মসজিদুল হারাম চত্বরের সীমানা থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ মিটারের মধ্যের হোটেলে এবং প্যাকেজ-২ এর হজযাত্রীরা সর্বোচ্চ ১৫০০ মিটারের মধ্যে কোনও হোটেলে অবস্থান করবেন।

চলতি মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী পরিবহনের জন্য ৩১ মে হজ ফ্লাইট শুরু করার কথা ছিল। তবে সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন টিম ঢাকায় এসে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় পিছিয়ে ৫ জুন নির্ধারণ করা হয়। রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে সৌদি আরবগামী শতভাগ হজযাত্রীর সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন হবে। এজন্য সৌদি আরবের ইমিগ্রেশনের একটি দল ঢাকায় অবস্থান করছে।

বাংলাদেশ থেকে এবার হজে যেতে ১২৮টি ফ্লাইট পরিচালিত হবে। এবার সৌদি আরবের সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স ছাড়াও দেশটির আরেকটি ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স হজযাত্রী পরিবহন করবে। বাংলাদেশ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করবে। বিমান ৬৫টি, সাউদিয়া ৫১টি, ফ্লাইনাস ১২টি ফ্লাইটে যাত্রী নিয়ে যাবে। ঢাকা থেকে শেষ হজ ফ্লাইট ছেড়ে যাবে ৪ জুলাই।

এবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নিজস্ব উড়োজাহাজ দিয়ে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে। যাওয়া-আসা মিলিয়ে ৬৫টি করে মোট ১৩০টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। বিমানের সবগুলোই ডেডিকেটেড ফ্লাইট হবে।

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, অন্যান্য বছর হজযাত্রী পরিবহনের জন্য দুই থেকে আড়াই মাস পর্যন্ত সময় পাওয়া যেত। এবার এক মাসেরও কম সময়। প্রত্যেকবার হজের শুরুতে হজযাত্রী কত হবে সেটা অনিশ্চিত থাকে। এবারও তাই ছিল। এ কারণে দুটি বিমান লিজ নেওয়ার কথা ছিল। তবে এবারের যাত্রী সংখ্যা কম হওয়ায় আমাদের আর উড়োজাহাজ ভাড়া করতে হচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *