শ্রীলঙ্কায় আন্দোলনকারীদের ওপর দমনপীড়ন দিন দিন বাড়ছে। রোববার (২৯ মে) আবারও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজধানী কলম্বো। এ অবস্থার মধ্যেই আন্দোলনকারীদের সরকারি কার্যক্রমে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী। খবর আল-জাজিরার।
প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে রোববারও বিক্ষোভে উত্তাল ছিল রাজধানী কলম্বো। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস ছোড়ে পুলিশ। বিক্ষোভকারীরাও পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। দুপক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা।
এর আগে, বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ঘেরাও করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড সরিয়ে অগ্রসর হতে থাকলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করা হয়। এতেও কাজ না হলে একপার্যায়ে টিয়ারগ্যাস ছোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।
এদিকে, আন্দোলন করে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা যাবে না উল্লেখ করে আন্দোলনকারীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। এক সাক্ষাৎকারে আন্দোলনরত যুবকদের সরকারি কার্যক্রমে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রধান সমস্যা অর্থনীতি। যুবকরা পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন। তারা সংস্কার চাচ্ছেন। বর্তমান পরিস্থিতি তারা ভালোভাবে জানেন। বিভিন্ন কমিটিতে যুবকদের অংশগ্রহণের সুযোগ আছে। তারা বিভিন্নভাবে সরকারকে এই জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহযোগিতা করতে পারেন।’
শনিবার (২৮ মে) রাতে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী তাদের বাধা দিলে বাড়তে থাকে উত্তেজনা। রাতেই কয়েক দফায় সংঘাতে জড়ায় দুপক্ষ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে নিরাপত্তা বাহিনী। আন্দোলনের ৫০তম দিনে প্রেসিডেন্টের বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়া হয় বলে জানান বিক্ষোভকারীরা। এর আগে দিনব্যাপী বিভিন্ন শহরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়।
স্বাধীনতার পর ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডলার সংকটে প্রায় সব নিত্যপণ্যের অভাব দেখা দিয়েছে দেশটিতে। সংকটের জন্য বর্তমান সরকারকে দায়ী করে বিক্ষোভ করে আসছে সাধারণ মানুষ। প্রায় দুমাস ধরে চলা বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রনিল বিক্রমাসিংহে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি।