সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদে ছিল এই সমাবেশ।
অনুষ্ঠিত সভায় সময় স্বল্পতার কারণে ভুল করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে বক্তব্য দিতে না দেওয়ার ঘোষণা আসে।
বিষয়টি নানান মাধ্যমে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। নিজের ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি।
এক লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ আহ্বয়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য হিসেবে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপি মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঢাকা মহানগর বিএনপির যেকোনও অনুষ্ঠানেই প্রটোকল অনুযায়ী আমি বিভিন্ন সময় বক্তব্য দিয়ে আসছি। কিন্তু সোমবারের অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম প্রোগ্রাম চলাকালীন হঠাৎ করেই ঘোষণা দেন যে, সময় স্বল্পতার কারণে বেশকিছু নেতা-কর্মীকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিতে পারছেন না। যারা বক্তব্য দিতে পারছেন না, তাদের মধ্যে আমার নামটিও তিনি ভুলবশত ঘোষণা করেন। এতে নেতা-কর্মীরা যাতে বিভ্রান্ত না হয়ে যায় এবং প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য বক্তাদের যাতে বক্তব্যের সময় কোনও প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্যই আমি দূরে গিয়ে দাঁড়াই।
তিনি বলেন, আমি বক্তব্য দিতে না দেওয়ার কারণে রাগ করে নয়, পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সমাবেশস্থল থেকে একটু দূরে সরে আসি।
নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া তার বক্তব্যটি হুবহু তুলে ধরা হল-
আসসালামু আলাইকুম
“প্রেস বিজ্ঞপ্তি”
“সভাস্থল ত্যাগ ক্ষুদ্ধ ইশরাক সংবাদ সঠিক নয়”
কোনো কোনো দৈনিক পত্রিকা অনলাইন বিভাগ থেকে ও কয়েকটি অনলাইন পত্রিকা’য় আমাকে উদ্দেশ্য করে নিউজ প্রকাশিত হয়েছে যা আমার দৃষ্টিগোচরে এসেছে-
আজ ২৩ মে সোমবার সকাল ১০ টা মিনিট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে-
প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া’কে প্রচ্ছন্ন হত্যার হুমকি’র প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল।
সমাবেশ শুরু হয়ে ধারাবাহিকভাবে দলীয় নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা দিচ্ছেন, এক পর্যায়ে সভার পরিচালক ঘোষণা করেন সময়ের স্বল্পতার কারণে এখন অনেকই বক্তব্য দেবার সুযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তার মধ্যে আমার নামও ঘোষণা করা হয়।
কিছু সময় পর আমি একটু দুরে গিয়ে নেতাকর্মীকে নিয়ে সভার পরবর্তী বক্তৃতার বক্তব্য শুনি এবং সভা শেষে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সভাস্থল ত্যাগ করি।
আমি ক্ষুদ্ধ হয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেছি এটা ঠিক নয়, আশাকরি এই ব্যাপারে কারো মাঝে কোনো রকম ভুল বুঝাবুঝি’র অবকাশ থাকবে না এবং দয়া করে প্রকাশিত সংবাদ সংশোধন করে আমাকে বাধিত করিবেন।
ধন্যবাদ
প্রকৌশল ইশরাক হোসেন
সদস্য বিএনপি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটি
ও
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী”
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সকাল দশটায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে যোগ দিতে প্রেসক্লাবে যান ইশরাক হোসেন। বেলা সাড়ে ১১টার পর একপর্যায়ে অনেককেই বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া যাচ্ছে না বলে যখন মাইকে ঘোষণা করা হয়। তখন এই ঘোষণায় ক্ষিপ্ত হওয়া কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে প্রেসক্লাবের ভেতরে চলে যান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে মঞ্চে আলোচনা হলে কিছুক্ষণ পর বক্তব্য দেওয়ার জন্য ইশরাকের নাম ঘোষণা করা হয়। তখন মঞ্চে না থাকায় ইশরাক এলে তাকে সুযোগ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়।
তবে, সময়ের জনপ্রিয় এই নেতাকে সমাবেশে বক্তব্য না দিতে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সমাবেশে আসা নেতাকর্মীরা। তারা জানান, মহানগরের প্রোগ্রামে ইশরাক হোসেন বক্তব্য রাখেবেন এটা খুবই স্বাভাবিক। তিনি তরুণদের কাছে জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ নেতা। কিন্তু আজকে তাকে বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়নি। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।সেইসাথে নির্বাচনের আগে একটি গোষ্ঠী বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিবর্তে আরও কোন্দল বাড়িয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। গত কয়েকবছর ধরে জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে পরিকল্পিতভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি করছে উল্লেখ করেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।