ঢাকা: চলতি বছর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৬ কোটি ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে সর্বশেষ হালনাগাদের চেয়ে এবার ২৬ কোটি টাকা বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচির বাজেট ও ব্যয় প্রাক্কলন কমিটির সভার কার্যবিবরণী থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
আগামী ২০ মে থেকে ২০ নভেম্বর থেকে সারাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করবে ইসি। এতে ১৪০ উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে হালনাগাদ করা হবে ৯ জুলাই পর্যন্ত। এরপর আরও তিন ধাপে অন্যান্য উপজেলায় কার্যক্রমটি পরিচালনা করা হবে।
এবারের হালনাগাদে ভোটার বৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ ৮৪ লাখ ৯৬ হাজার ৫২৬ জন ব্যক্তিকে হালনাগাদের অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সংস্থাটি। এবারও গতবারের মতো তিন বছরের তথ্য একসঙ্গে নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এদের মধ্যে যাদের বয়স যখন ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তখন তারা স্বয়ংক্রিভাবে ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন।
সর্বশেষ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ হয়েছিল ২০১৯ সালে। সে সময় ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের তথ্য নেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ সে সময়ও তিন বছরের তথ্য একসঙ্গে নেওয়া হয়েছিল। ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
ওই বছর হালনাগাদের সময় ৮০ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। এতে ৯৯ লাখ ৬০ হাজারের মতো নাগরিক নিবন্ধন করেছিলেন।
গতবারের সঙ্গে তুলনায় করলে দেখা যায়, প্রায় একই সংখ্যক নাগরিকের তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কার্যক্রম হাতে নিলেও এবার ২৬ কোটি টাকা বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে। তবে এর পেছনে যুক্তি হিসেবে সবকিছুর দাম বৃদ্ধিকে দাঁড় করানো হচ্ছে।
জানা গেছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদে নিয়োগ করা হচ্ছে ৫৫ হাজার ২০০ জন তথ্য সংগ্রহকারী, ১২ হাজার সুপারভাইজার। এক্ষেত্রে দুই হাজার ৫শ জন ভোটারের জন্য ১ জন তথ্য সংগ্রহকারী এবং ১২ হাজার ৫শ ভোটারের বিপরীতে এক জন সুপারভাইজার নিয়োগ করা হবে।
এছাড়া এ তথ্য সার্ভারে এন্ট্রি করার জন্য ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, পরিবহন, সার্ভার পরিচালনা, নিবন্ধন কেন্দ্র পরিচালনা, আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের তদারকি, সমন্বয়-যোগাযোগ ও জ্বালানিখাত, টেকিনক্যাল সাপোর্ট ইত্যাদি খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে ভোটার নিবন্ধন ও বিভিন্ন ভাতা খাতে। এতে ব্যয় হচ্ছে ৪৮ কোটি ৫৯ লাখ ৮১ হাজার ৯শ টাকা। এছাড়া তথ্য সংগ্রহ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ কোটি ৫৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এছাড়া সমন্বয়, যোগাযোগ ও অন্যান্য খাতে ধরা হয়েছে অবশিষ্ট টাকা।
২০০৭-২০০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর এ পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে পাঁচবার। ২০০৯-২০১০ সাল, ২০১২-২০১৩ সাল, ২০১৫-২০১৬ সাল, ২০১৭-২০১৮ সাল ও ২০১৯-২০২০ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ইসি। বর্তমানে ভোট আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষটির তথ্য ভাণ্ডারে মোট ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন ভোটারের তথ্য রয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন এবং মহিলা ভোটার ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন। হিজড়া ভোটার আছে ৪৫৪ জন।