তেলের বাজার মানেই আকাশচুম্বী দাম। সয়াবিন তেলের সংকটের পরে ক্রেতারা যেই না ঝুঁকতে শুরু করেছিল সরিষার তেলের দিকে, অমনি বেড়ে গেছে দাম। এবার দাম বাড়ল সূর্যমুখী তেলের।
দেশের মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্তদের একাংশের পছন্দের তালিকায় ছিল সূর্যমুখী তেল। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে মার্চের শুরু থেকেই বাজারে দেখা দেয় এই তেলের সংকট। এবার বেড়ে গেছে তেলের দাম।
বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ৫ লিটারের এক বোতল সূর্যমুখী তেলের দাম ব্র্যান্ডভেদে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮৭৫ টাকা, যা গত বছরের শুরুতে ৯৫০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা ছিল। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তেলটির দাম দফায় দফায় বেড়েছে। রোজার মধ্যেও বেড়েছে লিটারপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে সূর্যমুখী তেলের ৫৮ শতাংশ উৎপাদিত হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনে। গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর দেশ দুটি থেকে তেল আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সরবরাহ পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, তা-ও বলতে পারছে না বিপণনকারী কোম্পানিগুলো।
এদিকে কমে এসেছে সূর্যমুখী তেলের আমদানি। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাবে, সয়াবিন, পাম, শর্ষে ও কুঁড়ার তেল মিলিয়ে দেশে প্রায় ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। অলিভ অয়েল ও সূর্যমুখী তেলের বাজার ছোট বলে জাতীয় চাহিদার হিসাবের ক্ষেত্রে তা আলাদাভাবে বিবেচনা করা হয় না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যায়, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭০ লাখ লিটার সূর্যমুখী তেল আমদানি হয়েছে, অর্থাৎ ৭ হাজার টন। আমদানির ৫৫ শতাংশই এসেছে ইউক্রেন থেকে। এদিকে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) আমদানি কমে দাঁড়ায় ৩৬ লাখ লিটারে। এর মধ্যে ইউক্রেন থেকে এসেছে ৪২ শতাংশ, যা মূলত আমদানি বন্ধের আগে জাহাজে ওঠে। ইতালি, তুরস্ক, রাশিয়া, স্পেন, মালয়েশিয়া থেকেও এই তেল আমদানি হয়।