বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, হাসিনার বদলে কেয়ারটেকার, ইভিএমের বদলে ব্যালট পেপারে ভোট নিতে হবে। এ দাবিতে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তীব্র গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সেইসাথে একটি মিথ্যা বায়োবিও মামলায় কারারুদ্ধ ৩ বারের সাবেক নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এ দেশের গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। দেশনেতা তারেক রহমানকে বীরের বেশে দেশে প্রত্যাবর্তন করাতে হবে।
শনিবার ঐতিহাসিক দিনাজপুর ইনস্টিটিউট মাঠ প্রাঙ্গণে দিনাজপুর জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে ভার্চুয়ালি সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে তারেক রহমান বলেন, মসজিদের নগরী ঢাকাকে বর্তমান সরকার ক্যাসিনোর নগরীতে পরিণত করেছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির চিত্র এতটাই ভয়াবহ যে, আওয়ামী লীগ নেতাদের পকেটই এখন বিভিন্ন ব্যাংকের একেকটি ব্রাঞ্চ। দেশে আজ ৪০ লাখেরও বেশি নেতাকর্মী নির্যাতিত ও মামলায় জর্জরিত। এই কাউন্সিলে উপস্থিত প্রত্যেকর নামে অন্তত একটি করে মামলা রয়েছে। এইসব মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে দলের পক্ষ থেকে ডাক আসলেই সবাইকে একযোগে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। দেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এ সময় তারেক রহমান শ্লোগান দেন– ‘বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফায়সালা হবে রাজপথে। শেষে তিনি মাফিয়ামুক্ত বাংলাদেশে ফিরে আসার আশা ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, যে নেতারা হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করে পাচার করেছেন তাদের আওয়ামী লীগে জায়গা হবে না– আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ মন্তব্যই প্রমাণ করে আওয়ামী লীগ লুটেরা দুর্নীতিবাজের দল। আজ তাদের দুর্নীতির সীমা এতটাই বেড়ে গেছে যে, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মতো একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র স্থগিতাদেশ দিতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে এদেশের গণতন্ত্র আবার ফিরিয়ে আসবে। এ সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। একইসাথে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন করতে হবে। দেশের জনগণ এখন বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। এজন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করতে হবে।
দিনাজপুর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক রেজিনা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ জেড এম রেজওয়ানুল হক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আখতারুজ্জামান মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মকছেদ আলী মঙ্গলিয়া, সম্মেলন ও কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।