যারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করছে, তারা দেশের শত্রু বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, পি কে হালদারকে ফিরিয়ে আনতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার (১৪ মে) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পি কে হালদারের গ্রেফতারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পি কে হালদারকে দেশে নিয়ে আসার বিষয়ে আমরা এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রসেসিং শুরু করিনি। এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ। তারাই পি কে হালদারকে দেশে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করবে। দেশে নিয়ে এসে দুদকের মুখোমুখি করা হবে। তবে যারাই দেশের টাকা বিদেশে পাচার করুক না কেন, তারা দেশের শত্রু।’
এ বিষয়ে অপরাধী যেই হোক না কেন, তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে মন্তব্য করেন আব্দুল মোমেন।
এদিকে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা লোপাট মামলার আসামি প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, পি কে হালদার ভারতে গ্রেফতার হয়েছেন। এখন সেখানে তিনি যদি কোনো অপরাধ করে থাকেন, তবে সেখানকার আদালতে নেওয়া হবে। অথবা আমাদের সঙ্গে বহিঃসমর্পণ যে চুক্তি রয়েছে, সেই চুক্তির মাধ্যমে পি কে হালদারকে ভারত থেকে দেশে ফেরত এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’
দেশে ফেরানো মাত্রই পি কে-র বিচার শুরু হবে জানিয়ে দুদক আইনজীবী আরও বলেন, ‘ভারতে গ্রেফতার হওয়ায় আমাদের জন্য কাজটি সহজ হয়েছে।’
খুরশীদ আলম আরও বলেন, বাংলাদেশে ফেরানোর পর তাকে আদালতে তোলা হবে এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ ছাড়া যেসব তদন্ত অসম্পূর্ণ রয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে সেসব তদন্ত সম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে।’
শনিবার (১৪ মে) সকালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অভিযান চালিয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ মাথায় নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানো এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পি কে হালদার, তার ভাই ও স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও আত্মীয়স্বজনের নামে আরও বেশ কয়েকটি বাড়ির সন্ধান পায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আর গতকালই (১৩ মে) গ্রেফতার করা হয় তার ভাগনে প্রাণেশ হালদারকে।
হাজার কোটি টাকা লোপাটে মূল অভিযুক্ত ও পাচার মামলার পলাতক আসামি পি কে হালদার। দেশের পর দেশের বাইরে অভিযানে একের পর এক বেরিয়ে আসছে তার অর্থ পাচারের নানা তথ্য। খোঁজ মিলছে বিপুল পরিমাণ সম্পদের।
পাশাপাশি পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠ বেশ কজনের নামও উঠে এসেছে। এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে কয়েকজনকে।
পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে। বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনকালে এই অর্থ পাচার করেছিলেন তিনি। তাকে গ্রেফতার করতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।