করোনা টিকাদানে সফল দেশগুলোর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের শিশু উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থার সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে পেরু, ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্সকে সফল দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশকেও তালিকায় রাখা হয়েছে।
ইউনিসেফের ‘দ্য কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন সাকসেস স্টোরিজ’ শীর্ষক ও রিপোর্ট মতে, ২০২১ সালের জুনেও বাংলাদেশে পূর্ণ ডোজ টিকা প্রাপ্তদের সংখ্যা ছিল ৪ শতাংশেরও কম। এরপরে এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০.৫ শতাংশে। এপ্রিল পর্যন্ত জনসংখ্যার ৬৭ শতাংশেরই টিকার দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন হয়েছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৯ মে পর্যন্ত বিনামূল্যে ২৫ কোটি ৮৩ লাখ ২৬ হাজার ৭৩৩ ডোজ টিকা সরবরাহ করেছে সরকার। এর মধ্যে ১২ কোটি ৮৬ লাখ ২ হাজার ১৯১ ডোজ টিকা প্রথম ডোজ হিসেবে দেওয়া হয়েছে। ১১ কোটি ৬৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৫ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে। এছাড়া ১ কোটি ৩১ লাখ ৭ হাজার ৩৩৭ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে বুস্টার হিসেবে।
২০২০ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ প্রথম করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। শুরুর দিকে অনেক বিশেষজ্ঞই আশঙ্কা প্রকাশ করেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে কোটি মানুষ মারা যাবে। তবে সেই আশঙ্কা মিথ্যা প্রমাণ করে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সফলতার পরিচয় দিয়েছে। এজন্য ইতোমধ্যে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলেছে।
করোনাভাইরাস সামলে ওঠার ক্ষেত্রে বিশ্বের যে দেশগুলো সবচেয়ে ভালো করেছে তাদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে জাপানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নিকেই এশিয়া। সেই তালিকায় বিশ্বের মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার ওপরে।
করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা, টিকাদান এবং এই মহামারি মোকাবিলায় সামাজিক তৎপরতার ওপর ভিত্তি করে এই সূচক প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে ২০২১ সালে বৈশ্বিক মহামারি করোনা সফলভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত বলে তখন মন্তব্য করেন তিনি।
এছাড়া ওই বছরের অক্টোবর মাসে জাতিসংঘের জনসংখ্যাবিষয়ক তহবিলের (ইউএনপিএফ) বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. আশা তোরকেলসন করোনা নিয়ন্ত্রণে সুইডেন-ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ ভালো সক্ষমতা দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেন।