লিবিয়ার বন্দী দুই বাংলাদেশি মুক্ত যেন ঈদের চাঁদ দেখেছে দুই পরিবার

Slider টপ নিউজ

8affef52b2a583483d78b459dca7467a-4

লিবিয়ায় জঙ্গিদের হাতে অপহৃত দুই বাংলাদেশি হেলালউদ্দিন ও আনোয়ার হোসেনের মুক্তি পাওয়ার খবরে পরিবার দুটির সদস্যরা এখন স্বস্তিতে আছেন। জিম্মি হওয়ার ২০ দিন পর মুক্তির এই খবর তাঁদের কাছে যেন ঈদের চাঁদ দেখার মতো আনন্দের। স্বজনেরা বলছেন, ওই দুই বাংলাদেশি দেশে ফিরলেই আসবে ঈদের আনন্দ।

আনোয়ার হোসেনের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নে। ছেলে অপহৃত হওয়ার পর থেকে তাঁর বৃদ্ধ বাবা ইউনুছ মিয়া ও মা আফরোজা বেগম চরম উদ্বেগে ছিলেন। আনোয়ারের স্ত্রী মারুফা খাতুন দুই সন্তান রাহিম (৬) ও রাইমাকে (৪) নিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে থাকেন। আনোয়ারের মুক্তির খবরে তাঁর পরিবারে ফিরে এসেছে স্বস্তি।

মারুফা খাতুন আজ বুধবার সকালে বলেন, গত রাতেই স্বামীর মুক্তির খবর পেয়েছেন। ২০ দিন পর বুকের ওপর থেকে যেন একটা ভারী পাথর নামল। এখন তিনি স্বামীর দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন।

মারুফা বলেন, ‘২০১২ সালের শেষে আমার স্বামী সর্বশেষ দেশে এসেছিল। মাস দুয়েক থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি চলে যায়। এরপর দুই বছর ধরে দেখা নাই। এখন আমি স্বামীকে দেখলে আর আমার দুই সন্তান ওদের বাবাকে দেখলে আসবে আসল আনন্দ।’

হেলালউদ্দিনের পরিবারও এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। জিম্মি হওয়ার ১৮ দিন পর মঙ্গলবার সকালে স্ত্রী আলেয়া বেগম ও বড় মেয়ে হেলেনা আক্তারের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে মুক্তি পাওয়ার আশা প্রকাশ করে দোয়া চেয়েছিলেন হেলালউদ্দিন। তবে সেটি যে এত তাড়াতাড়ি হবে, বুঝতে পারেনি তাঁর পরিবার।

হেলালউদ্দিনের বোন জোহরা বেগম আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিভি দেখে রাতেই আমরা ভাইয়ের মুক্তির খবর পেয়েছি। ভাবি, ভাতিজা-ভাস্তি, আমরা সবাই খুশি।’

হেলালের স্ত্রী আলেয়া বেগম বলেন, হেলাল দেশে ফিরলেই আসল খুশি। বড় মেয়ে হেলেনা আক্তার বলেন, ‘আব্বা মুক্তি পাওয়ার পর এখনো একবারও ফোন ক‌রে নাই। আমরা কথা বলার জন্য অপেক্ষা করে আছি। আর আব্বা সর্বশেষ গেছে এক বছর হয়ে গেছে। আমরা সবাই দেখার অপেক্ষায় আছি। আব্বা দেশে ফিরলেই আমাদের ঈদের আনন্দ হবে।’

গত ৬ মার্চ লিবিয়ার সিরতে শহরের আল ঘানি তেলখনিতে বন্দুকধারী জঙ্গিরা হামলা চালায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আগেই জঙ্গিরা ১১ জন নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যা করে। পরে সেখান থেকে দুই বাংলাদেশিসহ নয়জন বিদেশিকে জিম্মি করা হয়। তাঁরা সবাই ভ্যালু অ্যাডেড ওয়েলফিল্ড সার্ভিসেস (ভিওএএস) নামের প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন।

লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম গতকাল রাতে হেলালউদ্দিন ও আনোয়ার হোসেনের মুক্তির খবরটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি  বলেন, ‘তাঁরা যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, সেই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমাদের মুক্তির খবর জানানো হয়েছে। দুজনকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা সুস্থ আছেন। আজ এই দুজনের ত্রিপলী আসার কথা। এর পরই আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারব।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *