ঈদের সপ্তাহখানেক আগে থেকেই বাজারে ভোজ্য তেলের সংকট চলছিল। ঈদের পর সংকট আরও তীব্র হয়েছে। বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচার্স এসোসিয়েশনের নতুন করে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৩৮ টাকা বাড়িয়ে ১৯৮ টাকা করার পরও দোকানে পণ্যটি মিলছে না। অথচ সংগঠনটির শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেছিলেন, দাম সমন্বয় হলে তেলের সংকট থাকবে না। ওদিকে বাজারে তেল মিললেও লিটারে মূল্য নেয়া হচ্ছে ২০০ টাকার উপরে। আবার দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বোতলে নতুন দাম সাঁটিয়ে তেল এখনো আসেনি বাজারে। যেসব দোকানে তেল আছে, তাতে আগের গায়ের দাম লেখা। তবে বিক্রেতারা দাম নিচ্ছেন নতুন দরে। একদিনের ব্যবধানে তাদের মুনাফা লিটারে ৪০ টাকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটি কিনতে ক্রেতার নাভিশ্বাস উঠছে।
রাজধানীর কাওরান বাজার, হাতিরপুল, রামপুরা, মালিবাগসহ বিভিন্ন স্থানে মুদি দোকান ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে
দোকানিরা বলেন, বেশির ভাগ মুদি দোকানে সয়াবিন তেল নেই। কোম্পানির পরিবেশকরা তাদের তেল দিচ্ছেন না। দু-একটি দোকানে ৫ লিটারের বোতলজাত তেল পাওয়া গেলেও ইচ্ছামতো দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা।
ভোজ্য তেল আমদানিকারকদের সংগঠন জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। সেই বিবেচনায় বাংলাদেশে তেলের মূল্য সমন্বয় করা হলো। নতুন নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯৮ ও খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকায় বিক্রি হবে। এ ছাড়া পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৮৫ টাকা। একইসঙ্গে প্রতি লিটার পাম অয়েল বিক্রি হবে ১৭২ টাকায়।
সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন নতুন দাম বাড়ানো তেল কবে আমদানি করা হয়েছে। যদি আগের কম দামে আমদানি করা হয় তাহলে মূল্য বাড়ানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। কারণ কম দামে আমদানি করে বেশি দামে বিক্রি করা কোনোভাবেই সঠিক হতে পারে না।
তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, ২০১৯ সালে দেশের বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ছিল ১০৪ টাকা। ২০২০ সালে সেটি বেড়ে হয় ১১৩ টাকা। আর এক বছর আগে বোতলজাত তেলের লিটার ছিল ১৩৪ টাকা করে। গত ৬ই ফেব্রুয়ারি তা নির্ধারণ করা হয় ১৬৮ টাকা। ব্যবসায়ীরা মার্চ থেকে লিটারে আরও ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৮০ টাকা করতে চেয়েছিল। কিন্তু সরকার রাজি না হলে সেদিন থেকে বাজারে সরবরাহে দেখা দেয় ঘাটতি।
এরপর সরকার ভোজ্য তেল উৎপাদন ও বিক্রির ওপর থেকে ভ্যাট পুরোপুরি আর আমদানিতে ৫ শতাংশ রেখে বাকি সব ভ্যাট প্রত্যাহার করে নেয়। পরে গত ২০শে মার্চ লিটারে ৮ টাকা কমিয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ঠিক করা হয় ১৬০ টাকা। সেদিন পাঁচ লিটারের বোতল ৭৯৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৭৬০ টাকা এবং খোলা সয়াবিনের দাম ১৪৩ টাকা থেকে কমিয়ে ১৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে এলেও ঈদের আগে আবার অস্থির হয়ে ওঠে বাজার। বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় সয়াবিন তেল। আর যেসব দোকানে সয়াবিন তেল ছিল, সেগুলো বিক্রি হচ্ছিল সরকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে অনেক বেশিতে।
এদিকে পামওয়েলের লিটার (খোলা) ২০১৯ সালে ছিল ৫৮ টাকা, ২০২০ সালে লিটারে ৭৮ টাকা, ২০২১ সালে ১০৭ টাকা এবং ২০২২ সালের শুরুতে হয় ১৫০ টাকা। এখন ১৬৫ টাকা।
খুচরা বিক্রেতারা দাবি করছে, কোম্পানিগুলো তাদের তেল সরবরাহ করছে না। সামান্য কিছু তেল তাদের দোকানে থাকলেও তা দাম বাড়ার খবরে ক্রেতারা নিয়ে গেছেন। এখন সয়াবিন তেল শূন্য দোকান। পাইকারদের কাছে থেকেও তারা খোলা সয়াবিন কিনতে পারছেন না বলে দাবি করেন। সোহেল নামের এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, আমরা কোম্পানি থেকে বোতলের সয়াবিন পাচ্ছি না। তাদের জিগ্যেস করলে বলে তেল আমদানি হয় নাই। আমদানি হলে আমাদের দিবে। আরেক বিক্রেতা বলেন, তেল বিক্রি করে শান্তি নাই। বাজারে কোনো তেল নাই। আমাদের কাস্টমাররা এসে ফিরে যাচ্ছে। তারা মনে করে আমরা ইচ্ছে করে দিচ্ছি না। কিন্তু আমাদেরকে কোম্পানি তেল দিচ্ছে না। আমরা কীভাবে দিবো। তারা বলছেন, সরবরাহ স্বাভাবিক হতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। এই কয়েক দিনে বোতলের গায়ে লেখা বেশি দামের তেল আসতে শুরু করবে।
সরজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর কাওরান বাজার থেকেও উধাও সয়াবিন তেল। এখানের খুচরা দোকানগুলো খুঁজে কোথাও সয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি। বার বার তেলের দামের হেরফেরের কারণে ক্রেতাদের সঙ্গে নানা সময়ে বাকবিতণ্ডায় জড়ান বিক্রেতারা। অনেক সময় বাড়তি দামে তেল বিক্রি করায় ভোক্তা অধিকারের জরিমানাতেও পড়েছেন অনেকে। তবুও তেল নিয়ে কারসাজি থেমে নেই বাজারগুলোতে।
গতকাল রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজারের ১০ দোকান ঘুরে তেল পাওয়া যায়নি। সরিষা তেল থাকলেও দাম চড়া। এক লিটার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকায়।
কাওরান বাজারের ভোজ্য তেলের পাইকারি ব্যবসায়ী সিদ্দিক বলেন, আমাদের কাছে তেল নাই। অল্প কিছু ছিল তা শুধু দোকানদারদের দেয়া হচ্ছে। তবে কাল থেকে নতুন দামে তেল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৮০ টাকা। ২০২১ সালের ৫ই মে বোতলজাত সয়াবিনের দাম ছিল ১১৮ টাকা।
কাওরান বাজারে কয়েক দোকান ঘুরেও সয়াবিন তেল কিনতে পারেননি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সিয়াম আহমেদ। তিনি বলেন, বাজারের কোনো দোকানে তেল পেলাম না। বার বার তেলের সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। রাজু আহমেদ নামের আরেক ক্রেতা তেল কিনতে এসে ফিরে গিয়েছেন। তিনি বলেন, বাসায় তেল নেই। কীভাবে রান্না হবে। এখন আবার নতুন করে তেলের দাম ৩৮ টাকা বাড়াইছে। তারপরেও কোনো তেল পেলাম না। সব দোকানেই একই অবস্থা। কোথাও তেল নেই। টিভিতে মাঝেমধ্যে জরিমানা করতে দেখি। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয় না। আমাদের জিম্মি হয়ে থাকতে হয় বাজারে আসলে।
গতকাল সকালে বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে বের হয়েছেন ইমরান আলী। মিরপুর ১০ এর বিভিন্ন দোকান ঘুরেও তিনি এক বোতল তেল কিনতে পারলেন না। ইমরান বলেন, ৭-৮টা দোকানে গেলাম। কেউ বোতলের সয়াবিন তেল দিতে পারলো না। বিক্রেতাদের কাছে জানতে চাইলে বলে তেল নাই। সাপ্লাই নাই। গণমাধ্যমে দেখলাম তেলের নাকি কোনো সংকট নেই। তাহলে হলোটা কি?
বোতলজাত তেল না থাকায় খোলা সয়াবিন তেলের খোঁজ করলেন তিনি। একটি দোকানে খোলা সয়াবিন তেল থাকলেও তার দাম হাঁকালো কেজিপ্রতি ২১০ টাকা। পাশের আরও কয়েকটি দোকান ঘুরলে সেখানে এর থেকে আরও ১০ টাকা বাড়িয়ে ২২০ টাকা দাম হাঁকাচ্ছেন দোকানিরা। এরপর সুপারশপে গিয়েও কোনো বোতলজাত সয়াবিন তেল খুঁজে পেলেন না তিনি। তাই তেল না কিনেই বাড়ি ফিরে গেলেন এই ক্রেতা।
মধুবাগ বাজারের মুদি দোকানি মনজুর বলেন, পাইকারদের কাছে তেল চেয়ে পাননি। ঈদের আগে থেকে দোকানে সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ। আর এক দোকানি হাকিম আলী বলেন, ঈদের আগে চড়া দামে তেল কিনতে হয়েছে। তাই বিক্রি করছি বেশি দামে। কিন্তু চাহিদামতো তেল আনতে পারেননি।
কাওরান বাজারে দু-একটি দোকানে আগের কিছু তেল আছে। সেটা বিক্রি করছেন নতুন দামে। তবে গায়ে লেখা আগের দাম। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সানফ্লাওয়ারের দাম ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দাম হাঁকা হচ্ছে, যা ঈদের আগের দিনেই পাওয়া গেছে ১ হাজার ২০০ টাকায়। অর্থাৎ সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পর সানফ্লাওয়ারের দামও বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পাঁচ লিটারের রাইস ব্রান অয়েল বিক্রি হচ্ছে ৯৬৫ টাকায়। ঈদের আগে এই তেল পাওয়া গেছে ৯০০ টাকায়।
মরিয়ম স্টোরের বিক্রেতা আকিব বলেন, বাজারে খোলা আর ১-২ লিটারের বোতলজাত তেল নেই। কিছু দোকানে ৫ লিটার তেল আছে কিন্তু ইচ্ছামতো দাম রেখে বিক্রি করছেন দোকানিরা। যার থেকে যা নিতে পারে নিচ্ছে, ৮০০- ৮৫০ কিংবা ৯০০ টাকা নিচ্ছে। রোববার তেল দেবে বলে কোম্পানিগুলো জানিয়েছে।
ভোজ্য তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স) বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেশি হওয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে দাম সমন্বয় করা হয়েছে। বাজারে সয়াবিন তেলের কোনো ঘাটতি নেই। ঈদের আগে তেলের সংকটের কোনো কারণ ছিল না। আমরা তেল সরবরাহ স্বাভাবিক রেখেছি।
দেশে ভোজ্য তেলের চাহিদার ৮০ শতাংশের বেশি আমদানি করে পূরণ করা হয়। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত আকারে আমদানি করে এবং বীজ আমদানি করে তা ভাঙিয়ে তেল উৎপাদন করে আটটির মতো প্রতিষ্ঠান।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, গত মার্চ ও এপ্রিল- এই দুই মাসে সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে ৯২ হাজার টন। আমদানি কমেছে পাম তেলেরও। গত মার্চ ও এপ্রিল- দুই মাসে পাম তেল আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৩১ হাজার টন। একই সময়ে বাজারজাত হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টন। গত বছর একই সময়ে আমদানি হয় ২ লাখ ৬৭ হাজার টন। আর বাজারজাত হয় ২ লাখ ৯৮ হাজার টন। সব হিসাবে আগের তুলনায় আমদানি ও বাজারজাত দুটোই কমেছে।
বেসরকারি সংস্থা কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, এতদিন তো তেল পাওয়াই যায়নি। এখন লিটারে ৩৮ টাকা বেড়ে যাওয়ায় যেসব ব্যবসায়ীরা তেল মজুত করেছে তারা ভোক্তার আরও কিছু টাকা হাতিয়ে নিতে পারবে।
সূত্র জানায়, মিল থেকে এখন যেসব তেল বাজারে ছাড়া হচ্ছে সেগুলোর এলসি খোলা হয়েছে কমপক্ষে ৩ মাস আগে। ওই সময়ে তেলের দাম বেশ কম ছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবার বাড়তে শুরু করেছে। এই দরে এখন যেসব এলসি খোলা হচ্ছে সেগুলো দেশে আসবে কমপক্ষে ৩ মাস পর। এগুলো বন্দর থেকে খালাস হয়ে কোম্পানিতে পরিশোধন হয়ে বাজারে আসতে সময় লাগবে আরও কমপক্ষে এক মাস। সব মিলে বাড়তি দামে আমদানি করা তেল বাজারে আসতে কমপক্ষে ৪ মাস লাগবে। কিন্তু মিল মালিকরা এখনই ভোজ্য তেলের দাম বাড়াচ্ছেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২০২১ সালে ইন্ডাস্ট্রিয়াল (শিল্প খাতে) সুবিধায় আমদানি হওয়া ১৮ লাখ ১৮ হাজার টন (পরিশোধিত ও অপরিশোধিত) ভোজ্য তেলের শুল্কায়ন করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। শুল্কায়ন বিবেচনায় টিকে গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ ও এস আলম গ্রুপের অধীনে আমদানি হয়েছে ভোজ্য তেলের ৮৮ শতাংশ।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল সুবিধা নিয়ে ৫ লাখ ৫১ হাজার ৩৬৩ টন শুল্কায়ন করে ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি ভোজ্য তেল আমদানি হয়েছে টিকে গ্রুপের মাধ্যমে, যা মোট আমদানির ৩০.৩৩ শতাংশ।
২০২১ সালে মেঘনা গ্রুপের আমদানিকৃত ভোজ্য তেল শুল্কায়ন হয়েছে ৪ লাখ ১১ হাজার ৯২ টন, যা মোট আমদানির ২২.৬২ শতাংশ।
শিল্প সুবিধায় শুল্কায়ন হওয়া সিটি গ্রুপের আমদানিকৃত ভোজ্য তেলের পরিমাণ ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৫২০ টন, যা মোট আমদানির ১৯.১২ শতাংশ।
আমদানি তথ্য বলছে, ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি শুল্কায়ন হয়েছে ১২ লাখ ১৬ হাজার টন পরিশোধিত (রিফাইন্ড) পাম অয়েল। এর পরই রয়েছে অপরিশোধিত (ক্রুড) সয়াবিন ৬ লাখ ৩ হাজার টন। ২০২১ সালে এস আলম গ্রুপের আমদানিকৃত ভোজ্য তেল শুল্কায়ন হয়েছে ৩ লাখ ২ হাজার ৮৪৮ টন, যা মোট আমদানির ১৬.৬৫ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চের তুলনায় গত মাসে সয়াবিনের গড় দাম কমেছে টনপ্রতি ৯ ডলার করে। মার্চে পণ্যটির গড় দাম ছিল টনপ্রতি ১ হাজার ৯৫৭ ডলার। গত মাসে তা কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৪৮ ডলারে। এ ছাড়া এ সময় পাম অয়েলের দাম কমেছে প্রতি টনে ৯৪ ডলার। মার্চে বিশ্ববাজারে পাম অয়েলের গড় দাম ছিল প্রতি টন ১ হাজার ৭৭৭ ডলার। গত মাসে তা কমে দাঁড়ায় প্রতি টন ১ হাজার ৬৮৩ ডলারে।
গত মাসের অধিকাংশ সময় আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম ছিল নিম্নমুখী। তবে ইন্দোনেশিয়া পাম অয়েল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিলে ভোজ্য তেলের দাম আবারো বাড়তে থাকে।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) তথ্য অনুযায়ী দেশে সয়াবিন ও পাম অয়েল মিলিয়ে ভোজ্য তেলের মোট বার্ষিক চাহিদা ২০ লাখ টন। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয় ২ লাখ টন। বাকিটা আমদানি করতে হয়। যদিও এ খাতের উদ্যোক্তাদের দাবি, ভোজ্য তেলের চাহিদা আরও বেশি।