তৃতীয় বছরেও চলছে ‘সামান্য ইফতার’ নামের অসামান্য আয়োজন

Slider বিচিত্র


গাজীপুর, ২৭শে এপ্রিল ২০২২ : ঘড়ির কাঁটায় পাঁচটা বাজলেই এক এক করে এগিয়ে আসেন ইফতার গ্রহীতারা, প্রতিজন একটি করে প্যাকেট নিজ হাতে তুলে নিয়ে চলে যান সারিবদ্ধভাবে। বিকেল ৪টা বাজতেই ক্যাম্পাসের বাইরে ভিড় করতে থাকেন ইফতার নিতে আসা নারী-পুরুষ, শিশু।সাড়ে ৪টায় মেইন গেইট খুলে দেওয়া হলে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বসে পড়েন আগে থেকে সাজিয়ে রাখা চেয়ারে । বিকেল ৪টার আগেই এই চেয়ারগুলো সাজিয়ে রাখেন ইকবাল সিদ্দিকী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কচি-কাঁচা একাডেমি এবং নয়নপুর এনএস আদর্শ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

নেই কোনো বক্তৃতা, নেই কোনো অতিথি, নেই বিতরণ করার কেউ। বিকেল ৫টা বাজলেই প্রতিজন একটা করে ইফতারের প্যাকেট নিয়ে সারিবদ্ধভাবে বের হয়ে যান। প্রতি প্যাকেটে খিচুড়িরর সঙ্গে থাকে একটি করে সেদ্দ ডিম এবং দুটি করে খেজুর। সবাই চলে যাওয়ার পর আবার চেয়ারগুলো গুছিয়ে রাখেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই।

২০২০সালে করোনার প্রকোপের সময় মসজিদগুলোও যখন বন্ধ প্রায়, বন্ধ ছিলো জনসমাগম তখন থেকে শুরু হয় সামান্য ইফতার কর্মসূচির পথচলা। ২০২১ সালেও পুরো রমজান মাস জুড়ে চলে এ কার্যক্রম। ২০২২ সালে েএর ব্যাপ্তী বেড়েছে আরও। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য গাজীপুর সদর উপজেলাধীন ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটি আয়োজন করে আসছে ‘সামান্য ইফতার’ নামের এই কর্মসূচি। প্রতিদিন ১০০ প্যাকেট ইফতার দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে শুরু হলেও এখন প্রতিদিন প্রায় ৫০০ প্যাকেট ইফতার নিচ্ছেন পিছিয়ে পড়া মানুষেরা।
ইফতার গ্রহণ করতে আসা মানুষদের অধিকাংশই আবার নারী। তাদের মধ্য থেকে শারমিন আক্তার বলেন, “এই ইফতার খাইলে রাইতে আর রান্ধন লাগে না, একবেলার খাওন রান্না করলেই চলে।”

মোঃ ফিরুজ হাওলাদার বলেন, ” এইখানে বসার জন্য চেয়ার দেয়, নিজের হাতে নিজের ইফতার তুইলা নেই, সম্মানের সাথে ইফতার নিয়া যাই, আবার ঈদের আগে দুধ, সেমাই, চিনি, মুরগি, কাপড় নানান কিছু পাই।”

রুদ্রপুর গ্রামের বিলকিস আক্তার বলেন এইবার আমাগো পোলাপনরে নতুন জামা-কাপড়ও দিছে, পোলাপাইনে খুব খুশি, আমরাও খুশি।
‘সামান্য ইফতার’ কর্মসূচির উদোক্তা প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী এ বলেন, “সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা সামাজিক দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছি। তাই এটা কোনো একক ব্যক্তির কৃতিত্ব নয়, শুভ চিন্তার বিভিন্ন ব্যক্তির আন্তরিক সহযোগিতায় চলছে এই কর্মসূচি।”

উল্লেখ, ২০২০ সালে মোট ৬৯৬৯ প্যাকেট, ২০২১ সালে মোট ১০৩০১ প্যাকেট ইফতার নিয়েছেন এলাকার মানুষেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *