ঠাকুরগাঁও: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশে একটা নতুন আইন আসছে সংবাদকর্মীদের নিয়ে। কিন্তু সংবাদকর্মীদের নিয়ে তো আইন দরকার হয় না।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সাত শ’র বেশি ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দিয়েছেন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে। গত তিন মাসে ৪০ জনের বেশি সাংবাদিককে হত্যা করেছেন আপনারা। আর কত? আপনারা দয়া করে সংবাদকর্মীদের ওপর আর চড়াও হবেন না।’
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় আওয়ামী লীগ সরকারকে বর্গীদের সাথে তুলনা করে তিনি বলেন, ‘অনিশ্চয়তার মধ্যে চলছে দেশ। এখনো মানুষ তার মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশ ও দেশের মানুষ আজ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নেই, পরাধীনতার শেকলেই বন্দী রয়েছে। লাখ লাখ টাকা দেশ থেকে পাচার করে দেয়া হচ্ছে। বর্গীদের মতো আওয়ামী লীগ এসেছে এদেশ থেকে সবকিছু লুট করতে।’
জনগণ থেকে এই সরকার সম্পূর্ণ বিছিন্ন হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ সরকারের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করলেই তাকে জেলে নেয়া হয়। তার প্রমাণ কলাবাগানের মা ও ছেলে। এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে এই সরকার কতটা স্বৈরাচার।’
দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকার নিউমার্কেটে হামলার ঘটনায় পত্র-পত্রিকায় ছবিসহ প্রকাশিত হলো আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ হামলায় জড়িত। হামলায় দুজন মারা গিয়েছে। যার সাথে ছাত্রলীগ জড়িত, কিন্তু আসামি করা হলো বিএনপিকে। তিন দিনের রিমান্ডেও নেয়া হলো। এটাই হচ্ছে প্রশাসনকে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে, বিচারবিভাগকে দলীয়করণ করা। আর এসব এখন কিছু মিডিয়া তুলেও ধরছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আমলা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। জনগণ থেকে এ সরকার সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।’
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে আওয়ামী লীগ এখন চিহ্নিত স্বৈরতান্ত্রিক সরকার। বিভিন্ন দেশ এরইমধ্যে আওয়ামী সরকারকে স্বৈরাচারী দল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তার প্রমাণ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন। আর দেশের মানুষ নিজেরাই টের পাচ্ছে যে তারা একটি ফ্যাসিবাদ সরকারের আওতায় রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের কথা বললে হাস্যকর মনে হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যে খুশির বার্তা নিয়ে ঈদ আসবে। আল্লাহ যেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার তৌফিক দেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যেন দেশে ফিরে এসে নেতৃত্ব দিতে পারেন এবং দেশের মানুষ যেন কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার সুখটা ফিরে পায় এটাই আমাদের চাওয়া।’
এসময় বিএনপির নির্বাহী সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ, জেলা সভাপতি তৈমুর রহমানসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।