সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লার নতুন করে ছায়ার হাওরের মাউতির বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে হাজারো কৃষকের পাকা বোরো ধান।
রোববার সকালে হঠাৎ ছায়ার হাওরের ৮১ পিআইসির বাঁধটি ভেঙে সুনামগঞ্জের শাল্লা ও দিরাই উপজেলা, নেত্রকোণার খালিয়াজুরি ও কিশোগঞ্জের ইটনা উপজেলার ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে শাল্লা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু বলেন, এই হাওরে সবচেয়ে বেশি জমি শাল্লা উপজেলার। কিছু জমি কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন ও কিছু জমি নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার কৃষকদের। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক ধান কাটা হয়েছে। বাকি অর্ধেক ধান কাটা বাকি আছে। এ অবস্থায় হাওর তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
স্থানীয়রা জানান, রোববার ভোরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিআইসি নির্মিত বাঁধটিতে ফাটল দেখা দেয়। পরে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করতে থাকে। বাঁধ ভাঙার এ দৃশ্য দেখে হাজারো কৃষক তাদের অবশিষ্ট জমির ধান কাটতে হাওরে নামেন।
কৃষকরা জানান, অকৃষক কৃপেন্দ্র দাসকে সভাপতি করে ২২ লাখ টাকার এই প্রকল্প দেয়া হয়। পিআইসি সভাপতি কৃপেন্দ্র সিলেটে অবস্থান করেন। তিনি কৃষকও নন। তাই বাঁধের কাজে নানা দুর্বলতা ছিল। এই দুর্বলতার কারণেই বাঁধ ভেঙে হাওরের কাটার বাকি অবশিষ্ট জমির ধান তলিয়ে যাচ্ছে।
তবে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব দাবি করেন হাওরের ৯০ ভাগ ফসল কাটা শেষ। শনিবার রাত ১১টায় কালবৈশাখী হচ্ছিল। ওই সময় তদারকিতে কেউ না থাকায় বাঁধ ভেঙেছে।
হাওরের কৃষকরা তাদের সোনালী ফসল তলিয়ে যাওয়ার পাউবোকেই দায়ি করেছেন।
তারা বলেন, হাওর সঠিক সময়ে কাজ শুরু হয়নি এবং সঠিক সময়ে কাজ শেষ হয়নি। এখন পর্যন্ত কোনো বাঁধের শত ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘোষণা দেননি। দেড়িতে কাজ হওয়ায় বাঁধের মাটি ঠিক হয়নি। নিয়ম মোতাবেক বাঁধে দুরমুজ না করায় পানির ধাক্কা নিতে পারেনি বাঁধ তাই সহজেই ভেঙে গেছে। সব মিলিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ, তাদের পিআইসি এবং প্রশাসনের গাফিলতিকেই হাওর ডুবার জন্য দায়ি করলেন ছায়ার হাওরের কৃষকরা।