রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত মো. মুরসালিনের মাথায় গভীর ফাটা জখম পাওয়া গেছে। মুখমণ্ডলের অন্যান্য অংশেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা যান মুরসালিন। এরপর তার সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন নিউমার্কেট থানার পুলিশ সদস্য হালদার অর্পিত ঠাকুর। মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে লেখা হয়েছে, মারপিট করার আঘাত।
তিনি লিখেছেন, ‘মৃত মো. মুরসালিনের (২৪) কপালসহ সমস্ত মাথায় সাদা রাউন্ড ব্যান্ডেজ। ব্যান্ডেজ খুলে দেখা যায়, মাথার মাঝখানে গভীর ফাটা জখম। কপালের বাঁ পাশে কালো জখম, নাক ও ঠোঁটে জখম।’
স্বজনরা জানান, নিউমার্কেট ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে দোকান থেকে নামাজ পড়তে বের হন মুরসালিন। এরপর খবর আসে নূরজাহান মার্কেটের সামনে ইটের আঘাতে আহত হন দুই সন্তানের এই জনক। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরে নেওয়া হয় আইসিইউতে। সেখানেই জীবনযুদ্ধে হেরে যান তিনি, বৃহস্পতিবার ভোরে মৃত্যু হয় তার।
ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আঘাতের কারণে মুরসালিনের মাথার ভেতরে কোথাও কোথাও রক্ত জমাট বেঁধে যায়। এতে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়। পরে একে একে শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবারই বেলা দেড়টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে মুরসালিনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জানাজা শেষে তাকে বিকেলে আজিমপুরে দাফন করা হয়।
নিহত মুরসালিনের স্ত্রী মিতুর চোখে মুখে প্রশ্ন, ছোট ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে কীভাবে কাটবে সামনের দিন। মিতুর দাবি, তার সন্তানের দায়িত্ব নিক দোকান মালিক সমিতি ও সরকার।
কামরাঙ্গীরচরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকা মুরসালিন ৯ হাজার টাকা মাসিক বেতনে চাকরি করতেন নিউমার্কেটের একটি শার্টের দোকানে। তিনিই ছিলেন চার সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।