রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে জখম ও ভাঙচুরের অভিযোগ এনে নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেনকে ১ নম্বর আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।
এছাড়া মামলায় আরও ২২ জনের নাম উল্লেখসহ নিউমার্কেটের অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিনশ জন ব্যবসায়ী ও কর্মচারি এবং ঢাকা কলেজের অজ্ঞাতনামা ছয় থেকে সাতশত ছাত্রের কথা বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশের নিউমার্কেট অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহেনশাহ মাহমুদ বলেন, গোয়েন্দা তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাদেরকে আসামি করা হয়েছে।
গত সোমবার (১৮ এপ্রিল) নিউমার্কেটের ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল নামে যে দুটি খাবারের দোকান থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় সেই দোকান দুটি সিটি কর্পোরেশন থেকে বরাদ্দ নিয়েছিলেন মকবুল হোসেন। তবে তিনি দোকান দুটি নিজে চালান না, ভাড়া দিয়েছেন।
এ বিষয়ে মকবুল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, নব্বইয়ের দশকে আমি দোকান দুটি সিটি কর্পোরেশন থেকে বরাদ্দ নিয়েছি। তারপর থেকেই দোকান দুটি ভাড়া দেওয়া।
তিনি বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় সম্পৃক্ততা তো দূরে থাক, গত চার মাস আমি নিউমার্কেট এলাকায় যাইনি।
তবে মকবুল হোসেনের আসামি হওয়ার বিষয়টি জেনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, মকবুল হোসেনে রাজনৈতিক পরিচয় আছে সেটা ঠিক। কিন্তু তিনি তো দোকান চালান না। তিনি বরাদ্দ নেওয়া দোকান ভাড়া দিয়েছেন। ভাড়া দোকানের কর্মচারিদের বিরোধে তাকে যদি আসামি করা হয়, সেটি তো সমস্যা।
মামলার নাম উল্লেখপূর্বক অন্য আসামিরা হলেন- আমির হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপু, হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহিদুল ইসলাম শহিদ, মিজান ব্যাপারী, আসিফ, রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল, হারুন, হেহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল।
প্রসঙ্গত, সোমবার (১৮ এপ্রিল) দিবাগত রাতে দুই দোকানের কর্মচারিদের মধ্যে বিবাদ থেকে সূত্রপাত হয় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নিউমার্কেট এলাকা। এই সংঘর্ষে নাহিদ ও মোরসালিন নামে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনটি মামলা হয়েছে। তবে এসব মামলায় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কাউকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি।