ভারতের পাহাড়ি ঢলে মেঘনার পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নাসিরনগর উপজেলার হাওড়পারের কৃষকরা।
হাওরাঞ্চরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মেদির হাওর, আকাশি বিল, আটাওরি বিল, বিল বালিঙ্গা, কচরা বিল, ধইল্যা বিল ও খাসারচরের চারদিকে পানি থৈ থৈ করছে। এসব বিলের পানির নিচে তলিয়ে গেছে কৃষকের সোনালী ফসল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উপজেলার গোয়ালনগর, ভলাকূট ও সদর ইউনিয়নে। এছাড়া বুড়িশ্বর, কুণ্ডা, গোকর্ণ ও হরিপুর ইউনিয়নও রয়েছে অধিক ঝুঁকিতে। ওই এলাকার কৃষকের দাবি- গত এক সপ্তাহে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে। ফলে কোথাও হাঁটু পানিতে আবার কোথাও কোমর পানিতে নেমে ডুবে থাকা আধপাকা ধান কাটছেন কৃষকরা। এর মধ্যে অনেক জায়গায় পানির নিচে তলিয়ে থাকা ধানে ধরেছে পচন।
গোয়ালনগর ইউনিয়নের কৃষক মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, আমার চার হেক্টর জমির অধিকাংশ পানির নিচে ডুবে গেছে। যতটুকু সম্ভব বুক পানিতে নেমেও কাটার চেষ্টা করছি।
পানি বাড়তে থাকলে ঐটুকুও কাটতে পারবো বলে মনে হয় না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাইদ তারেক জানান, উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে এ পর্যন্ত ৭০ হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে। দুই দিনে মেঘনায় প্রায় ৭০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। তাই কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে পানি আরও বাড়তে পারে, দ্রুত ফসল কেটে ঘরে নিতে। তিনি আরও জানান, নাসিরনগরে বিভিন্ন হাওড়ে এ বছর প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে শিলাবৃষ্টি ও মেঘনায় পানি বৃদ্ধির কারণে প্রায় ১০০ হেক্টর ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত আড়াই হাজার কৃষকের নামের তালিকা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ২৫ কেজি করে এককালীন চাল সহায়তা পাবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদি হাসান খান শাওন বলেন, যে সব কৃষকের ধান ৮০ শতাংশ পেকেছে তা দ্রুত কেটে নিতে হবে। দ্রুত ধান কাটার জন্য আমরা সব রকমের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এমনকি মসজিদের মাইকেও ঘোষণা করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধান কাটার ব্যাপারে যে কোনো ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।