দেশের ৫৪ নদী দূষণমুক্ত করতে লিগ্যাল নোটিশ

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি


বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরীসহ দেশের ৫৪টি নদী রক্ষায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পক্ষ থেকে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ (ডিজি) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, নদীদূষণ দিন দিন বাড়ছে। শুধু বুড়িগঙ্গা নয়, আশপাশের তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরীরও একই হাল। এসব নদ-নদীতে জলজ প্রাণ ধারণ করার জন্য পানির মান যা থাকা উচিত, তার চেয়ে ঢের কম। মাঝে গত বছর করোনার কারণে লকডাউনের সময় কিছু এলাকার পানির মানের উন্নতি হয়েছিল। এখন সেই আগের হাল। এ কারণে দেশের অর্ধশতাধিক নদী রক্ষায় লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
দেশের নদ-নদী, জলাভূমি দখল ও দূষণ প্রতিরোধে কঠোর আইন করা, নৌপথকে সচল রাখতে নদীগুলোকে খনন করা, নদী ও জলাভূমির দূষণ রোধে সব কারখানায় শিল্পবর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) নির্মাণে সরকারকে অবিলম্বে উদ্যোগ নিতে হবে।
নোটিশে বলা হয়, দেশে ৫৪টি নদী।

বুড়িগঙ্গা, ব্রক্ষপুত্র, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, ধলেশ্বরী, মেঘনা, বালু, আড়িয়ালখাঁ, ময়নাকাটা, বিলপদ্ম, কীর্তিনাশা, সুতি, পারুলি, চিলাই, কালিগঙ্গা, পদ্মা, বানার, লৌহজং, বংশী, যমুনা, করতোয়া, গঙ্গা, আত্রাই, নারোদ, ইছামতি, (ঢাকা বিভাগে); রাজশাহীবিভাগ- তিস্তা, খড়খড়িয়া (রংপুর বিভাগ); ক্ষীরু (ময়মনসিংহ বিভাগ); কর্ণফুলী, হালদা, বিলডাকাতিয়া, তিতাস (চট্টগ্রাম বিভাগ), ময়ূর, ভৈরব, রুপসা, মাথাভাঙ্গা, পশুর, কাকশিয়ালী, গড়াই, মধুমতি, কুমার (খুলনা বিভাগ), কীর্তনখোলা, সুগন্ধা, লোহালিয়া, তেঁতুলিয়া, খাকদোনা, শিববাড়ীয়া (বরিশাল বিভাগ); সুরমা, কুশিয়ারা, সুতাং, সোনাই, কোরাঙ্গী, বরাক, ধোলাই (সিলেট বিভাগ) দূষিত নদীসমূহকে দূষণমুক্ত করতে একটি সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেছে বেলা। নোটিশে বেলা নদীসমূহের দূষণের উৎস চিহ্নিতকরণ ও দূষণকারীর পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত ও দূষণ প্রতিরোধ, দূষণকারীকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান ও ক্ষতিপূরণ আদায় এবং অতি দূষিত ও প্রাণহীন নদীগুলোকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন ঘোষণা ও সেই অনুযায়ী রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার দাবি জানিয়েছে।
বেলা সরকারি বিভিন্ন সংস্থার গবেষণা, ব্যক্তি বিশেষের গবেষণা এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ থেকে দূষিত নদীগুলো চিহ্নিত করে নোটিশটি প্রেরণ করে। এসব গবেষণায় ঢাকা ও আশেপাশের ৬টি যথা: বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ও মেঘনা নদী দূষণের ভয়াবহতা উঠে এসেছে। এছাড়া চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, দেশের উত্তরাঞ্চলের করতোয়া, তিস্তা, আত্রাই, পদ্মা, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কীর্তণখোলা, রূপসা ও লোয়ার মেঘনা নদীসমূহের পানিতে থাকা মাত্রাতিরিক্ত ধাতু মাটির উর্বরতা বিনষ্ট করছে। সেচকাজে এ পানি ব্যবহারের ফলে খাদ্যের মাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত ভারী ধাতু মানবদেহে প্রবেশ করে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে। লোয়ার কুমার, ধলেশ্বরী, বালু, সুতি, পারুলি এবং চিলাই নদীতে শিল্প দূষণে জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে মর্মে গবেষণায় উল্লেখ রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *