কোরআন প্রতিযোগিতায় শতাধিক দেশকে পেছনে ফেলে ১০ম বাংলাদেশ

Slider সারাবিশ্ব


বিশ্ব পরিমণ্ডলে মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নামটি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে কোরআনের হাফেজদের কারণে। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল হলি কোরআন অ্যাওয়ার্ডে নিজের সেরাটা দিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মোহাম্মদ তাওহিদুল ইসলাম ওবাইদুল্লাহ। আর এরইমধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ধারাবাহিক সাফল্যের মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত করেছেন এই কোরআনের হাফেজ।

কোরআনুল করিম মানব জাতির হেদায়েত, কল্যাণ, শান্তি ও পরকালীন মুক্তির নির্দেশনা। কোরআন তিলাওয়াতে মানুষের আত্মশুদ্ধি ঘটে, কোরআন মানুষকে উচ্চতর মর্যাদায় আসীন করে। এই বিশ্বাস ধারণ করে প্রতিটি মুসলমান কোরআনের জ্ঞান অর্জনে উৎসাহী হয়ে ওঠে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের এই মহাগ্রন্থের বাণী বুকে ধারণ করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একাধিক প্রতিযোগিতায় যে সাফল্য এনেছে বাংলাদেশের হাফেজরা তা যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অন্য কোনো আয়োজন থেকে আসেনি।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত কোরআন প্রতিযোগিতায় শীর্ষ দশে অবস্থান করে বিশ্ব দরবারে নিজের মাতৃভূমিকে গৌরবোজ্জ্বল করেছে বাংলাদেশি হাফেজ তাওহিদুল ইসলাম ওবাইদুল্লাহ। ২৫তম পবিত্র কোরআন প্রতিযোগিতায় শতাধিক দেশকে পেছনে ফেলে সেরা দশের খেতাব অর্জন করেছেন তিনি। এ প্রতিযোগিতায় এবার প্রথম হয়েছেন আলজেরিয়ার প্রতিযোগী আবু বকর।

শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) রাতে দুবাইয়ের কালচারাল অ্যান্ড সাইন্টিফিক অ্যাসোসিয়েশন হলরুমে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা স্মারক ও সনদ তুলে দেন দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স শেখ মনসুর বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম। এরআগে তাওহিদুলসহ অন্যান্য প্রতিযোগিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপরাষ্ট্রপতি ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম। এসময় তিনি তাদের কণ্ঠে কোরআন তেলওয়াত শোনেন এবং ভূয়সী প্রশংসা করেন।

আয়োজক কমিটির সদস্য খালেদ আল জাহিদ বলেন, দুবাই কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিযোগী ১০ম স্থান অধিকার করায় বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। বাংলাদেশের প্রতিযোগিরা বরাবরই এই প্রতিযোগিতায় শক্তিশালী প্রতিযোগী হিসেবে অংশগ্রহণ করে আসছে বিধায় তাদেরকে এবং যারা বিজয়ী হয়েছেন সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

কোরআন বিশেষজ্ঞদের মতে অন্যান্যদের চেয়ে তেলওয়াতের দিক দিয়ে বাংলাদেশের হাফেজরা এগিয়ে। তাদের ভাষাগত জ্ঞান, ব্যকরণ ও উচ্চারণ শৈলী যে কাউকে আকর্ষিত করে। তবে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রয়োজন সময়োপযোগী আর মানসম্মত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, পরিচর্যা ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা।

প্রতিযোগী হাফেজ তাওহিদুল ইসলাম ওবাইদুল্লাহ ঢাকার মারকাজুল তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট মাদরাসার ছাত্র। সে ২০০৮ সালে হিফজুল কোরআন, ২০১০ সালে রিভিও শেষ করে।

মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আয়তন ছোট হলেও কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের অবস্থান অনন্য উচ্চতায়। এখন এই সম্মান ও মেধাকে অটুট রাখতে যথাযথ প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা চান কোরআনের হাফেজরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *