ঢাকা: সামাজিক সব অনাচারের বিরুদ্ধে মানুষের মনে শুভবোধ জাগিয়ে তোলার মানস নিয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ বরণ করতে প্রভাতী আয়োজন শুরু করেছে ছায়ানট।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রবাদনের মধ্য দিয়ে রমনার বটমূলে সূচনা হয়েছে ছায়ানটের বর্ষবরণ-১৪২৯ এর অনুষ্ঠান।
এর পরপরই পরিবেশন করা হয়েছে সম্মেলক কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত ‘মন, জাগ’ মঙ্গললোকে’। এর মধ্য দিয়ে করোনার কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর সাড়ম্বরে উদযাপর শুরু হলো পয়লা বৈশাখের। অনুষ্ঠানস্থলের চারপাশ ঘিরে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ছায়ানটের বর্ষবরণের এ অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে ৩৭টি সঙ্গীত আয়োজন দিয়ে। এর মধ্যে পঞ্চকবির গান, ব্রতচারীদের ‘বাংলা ভূমির প্রেমে আমার প্রাণ হইল পাগল’, লোকগান ‘নাও ছাইড়া দে মাঝি, পাল উড়াইয়া দে’ প্রভৃতি গান রয়েছে। সঙ্গে থাকছে আবৃত্তি-পাঠের মতো বিষয়গুলোও। এবারের পরিবেশনে অংশ নেওয়া শিল্পী সংখ্যা ৮৫ জন। শিল্পীদের এ সংখ্যা আগে ছিল প্রায় ১৫০ জন।
এদিকে রমনার বটমূলের নিরাপত্তার দিকটি নিশ্চিত করতে সেখানে আছেন র্যাব সদস্যরা। তারা বিদ্যুতায়িত নিরাপত্তা-ফটক বসিয়েছেন। বসানো হয়েছে ক্লোজ-সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি)। আছে ডগ স্কোয়াডও। এ বিষয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, রমনার বটমূলে সাইবার পেট্রোলিং করছি। র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। ২৪ ঘণ্টাব্যাপী তারা দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। তারা কোনো তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের জানাচ্ছেন। অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সব গোয়েন্দা সংস্থা তাদের নিজ নিজ সাইবার টিম কাজ করছে। যেকোনো জায়গা থেকে কোনো তথ্য পেলে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাবো বলে আশা করছি। আমরা ব্যবস্থা নিতেও প্রস্তুত রয়েছি। গত অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে দেশের অন্যতম প্রধান সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছায়ানটের আয়োজনে বর্ষবরণের সংগীতানুষ্ঠান হয়ে আসছে। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর এখানে এ অনুষ্ঠানে ছেদ পড়ে। ছায়ানটের আয়োজনে প্রথম রমনার বটমূলে পয়লা বৈশাখের সূর্যোদয়ের সময় সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। এরপর কেবল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বৈরী পরিবেশের কারণে অনুষ্ঠান হতে পারেনি। ২০০১ সালে এ গানের অনুষ্ঠানে জঙ্গিরা ভয়াবহ বোমা হামলা করলেও অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়েনি। কিন্তু গত দুই বছর করোনা সংক্রমণের তীব্রতায় বটমূলে অনুষ্ঠান হতে পারেনি।