নরসিংদী: নরসিংদীর শিবপুরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নাঈম (২২) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার (১১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিবপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় টুটুল নামে আরও একজন আহত হয়েছেন। তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় পাঠানো করা হয়েছে।
নিহত নাঈম উপজেলার ধানুয়া এলাকার শাজাহান মিয়ার ছেলে। তিনি শেখ রাসেল শিশু-কিশোর স্মৃতি সংসদের পৌরসভার সভাপতি ছিলেন। আর আহত টুটুল পৌর এলাকার হাশিম মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিহত নাঈমের সঙ্গে ধানুয়া গ্রামের আলী গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। দ্বন্দ্বের জের ধরে কিশোর গ্যাংয়ের এ দুই গ্রুপের একাধিকবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় শিবপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে নিহত নাঈমদের ইফতার ছিল। ইফতারের আগে নাঈম ও তার সমর্থকরা আলীকে ধাওয়া দেয়। এরই জের ধরে আলী ও তার সমর্থকরা নাঈমকে খুঁজতে শহীদ আসাদ কলেজ গেট এলাকায় র্যাকি করতে থাকেন। নাঈম ইফতার শেষে বাড়ি ফেরার জন্য স্কুল থেকে বের হলেই আলীর নেতৃত্বে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন সমর্থক তাকে ঘিরে ফেলেন। এ সময় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে নাঈমকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এ সময় নাঈমের সঙ্গে থাকা টুটুল নামে একজন তাদের বাধা দিতে এলে তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে প্রতিপক্ষরা পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে শিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসক নাঈমকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় টুটুলকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এদিকে খবর পেয়ে শিবপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
নিহতের মামা মোকারম বলেন, মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি ভাগ্নে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। কী কারণে তাকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তা বলতে পারছি না।
নিহত নাঈমের বন্ধু মেহেদী বলেন, আমরা ইফতার শেষে বাড়ি ফেরার পথে আলী ও তার সমর্থকরা আমাদের ওপর দুই দিক থেকে হামলা করেন। এ সময় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে নাঈমকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। কুপিয়ে তার সারা শরীর ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলেন। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আমাদের আরেক বন্ধু আহত হয়েছেন। আলীর জন্য আমরা এলাকায় বের হতে পারি না। কয়েক দিন আগে আমার ওপরও হামলা করেছে। আমরা অবিলম্বে আলীসহ দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, এলাকার আধিপত্য নিয়ে একটি হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার খবর পেয়েছি। ঘটনার পর পরই অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।