ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে অস্থির সময় পার করছে বিশ্ব অর্থনীতি। আর তার প্রভাব পড়েছে মানুষের জীবনে।
যুদ্ধের জেরে দীর্ঘ ৬০ বছরের ইতিহাস ভেঙে আন্তর্জাতিক বাজারে মার্চ মাসে খাদ্যপণ্যের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
৬০ বছর ধরে ‘খাদ্য মূল্য সূচক’ নামে একটি তালিকা প্রকাশ করে আসছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মার্চ মাসের এই সূচকে খাদ্যশস্য, উদ্ভিজ্জ তেল এবং চিনির মতো মৌলিক জিনিসগুলোর ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির হার প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে দেখা গেছে, ৬০ বছর আগে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে গত মার্চ মাসে খাদ্যপণ্যের দাম এক লাফে সর্বোচ্চ প্রায় ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতেও রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল।
সূচক অনুযায়ী, উদ্ভিজ্জ তেলের দাম ২৩ শতাংশ বেড়েছে। সিরিয়াল খাদ্যশস্যের (গম-ভুট্টা) দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ। চিনির দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ, মাংসের বেড়েছে ৫ শতাংশ। যুদ্ধের প্রভাব সবচেয়ে কম পড়েছে দুধের উপর, এর দাম বেড়েছে ৩ শতাংশ।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের শিল্প বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এই বছর খাদ্যপণ্যের দাম সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
সূচক অনুসারে, বৈশ্বিক ফসল সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর কারণে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগেই খাদ্যপণ্যের দাম ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল।
এর মধ্যেই এই যুদ্ধ জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকটকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে রাজনীতিবিদদের উদ্বিগ্ন করে তুলছে এবং সারাবিশ্বে সামাজিক অস্থিরতার সতর্কবার্তা দিচ্ছে।
বিশ্বের শীর্ষ সূর্যমুখী তেলের রফতানিকারক দেশ ইউক্রেন। এছাড়া ভুট্টা ও গমের মতো খাদ্যশস্যেরও অন্যতম বৃহত্তম উৎপাদক দেশ এটি।
ইউক্রেনের লুহানস্ক ও ডোনেটস্ক অঞ্চলকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া। এরপর ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী।
রাশিয়ার সর্বাত্মক হামলার মুখে বাড়ি ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছেন ৫০ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয়।