ফের ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানোর দাবি

Slider অর্থ ও বাণিজ্য


ভোজ্য তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানিকারক এবং মিলমালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বৈঠকে অংশ নিয়ে আমদানিকারক ও মিলমালিকরা সয়াবিন তেলের দাম সমন্বয়ের (বাড়ানো) অনুরোধ জানিয়েছেন। বুধবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা ও ভোজ্যতেল আমদানিকারক এবং মিলমালিকরা অংশ নেন।
বৈঠকে সিটি, মেঘনা, এস আলম, বসুন্ধরা ও টি কে গ্রুপের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে ভোজ্য তেলের বাজার সমন্বয় করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান। দ্রুত সময়ে সমন্বয় না হলে বাজারে আবারও সমস্যা তৈরি হবে বলে জানান তারা।
মিলমালিকদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিনের দাম বেড়েছে। সরকার যে সময়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়, তখন প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিনের দাম ছিল এক হাজার ৪০৭ ডলার।

তবে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে এক হাজার ৮৮০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ফলে সরকার ভ্যাট প্রত্যাহার করলেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করায় তাদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।
তবে এখনই তেলের দাম সমন্বয়ে মিলমালিকদের অনুরোধে সাড়া দেয়নি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাড়তি দামে তেল আমদানির ফলে আমদানিকারক ও মিলমালিকদের মধ্যে দাম বাড়ানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে ঈদের পর মে মাসে এ দাম সমন্বয় নিয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এর আগে বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে অধিদপ্তর।
বৈঠকে মিলমালিক ও আমদানিকারকদের দাবির মুখে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, সরকার ইতিমধ্যে আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট রেখে অন্যান্য সব ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে। ফলে নতুন আমদানিতে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এক্ষেত্রে প্রতি লিটার তেলে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তারপরও আন্তর্জাতিক বাজার পর্যালোচনা করে ঈদুল ফিতরের পর সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বয় সভা হবে। সেখানে ভোজ্য তেলের দাম সমন্বয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
মিলমালিকরা জানান, দেশে দৈনিক পাঁচ হাজার টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। এর জোগান হিসেবে পর্যাপ্ত মজুত মিলমালিকদের কাছে রয়েছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, দেশের ৯৫ ভাগ ব্যবসায়ী সাধু। পাঁচভাগ অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য বিশৃঙ্খলা হয়। ভোক্তা অধিদপ্তর চাইছে- সুষম বাজারব্যবস্থা, যাতে সব আমদানিকারক এবং মিলমালিকরা আইনের মধ্যে থাকেন। সরকারের পক্ষ থেকে যে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে, তা যেন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়। এর মধ্যেও হয়তো অনেক সমস্যা থাকবে, যা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে। যারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বৈঠকের পরে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করা হয়। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, দেশের মিলগুলোতে ভোজ্য তেলের মজুত স্বাভাবিক রয়েছে। তারা সরকারের নির্ধারিত দামে বাজারে তেল সরবরাহ করছে। তবে পাইকারি ও ডিলার পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা যোগসাজশ করে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর অপচেষ্টা করছে। ফলে এবার পাইকারি ও ডিলার পর্যায়ে বাজার তদারকিতে নামবে সংস্থাটি।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আমদানিকারকরা আশ্বস্ত করেছেন, সরকারের নির্ধারিত দাম এবং নির্ধারিত সময়ে বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহ ঠিক রাখবেন। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে এবং ভোক্তা অধিদপ্তর থেকে কারখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। মিলমালিক বা পরিবেশকদের মধ্যে এখন কোনো সমস্যা নেই।
আপনার মতামত দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *