সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের কাছ থেকে সংবিধান রক্ষার কথা শোনা জাতির জন্য বড় দুর্ভাগ্য বলে সংসদে জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ কখনো ঋণখেলাপি ছিল না, কোনোদিন হবেও না। বৈদেশিক ঋণ নিয়ে জালিয়াতি বিএনপির সময়ে করা হয়েছে বলেও জানান সরকারপ্রধান।
বুধবার (৬ এপ্রিল) একাদশ জাতীয় সংসদের ১৭তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
এর আগে বাংলাদেশের পরিণতি শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে–এমন আশঙ্কা করে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছিলেন, বিদেশি ঋণের বোঝা বাংলাদেশ বইতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
বিরোধীদলীয় উপনেতার বক্তব্যের জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধীদলীয় উপনেতা শ্রীলঙ্কার বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এটা বাস্তব। তবে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত উন্নয়নে যত ঋণ নিয়েছে, সব ঋণ সময়মতো পরিশোধ করা হয়।
সমাপনী ভাষণে দ্রব্যমূল্য, রাজধানীতে যানজট নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বেগুনের পরিবর্তে মিষ্টিকুমড়া বা অন্য কোনো সবজি দিয়ে বেগুনি তৈরি করা, যানজট কমাতে ব্যক্তিগত গাড়ি কম বের করার পরামর্শ দেন।
সাধারণ মানুষের জন্য পাবলিক বাস বাড়ানো ও মেট্রোরেল করা হচ্ছে জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, অতিরিক্ত গাড়ি এখন রাস্তায় চলে। সবাই ট্রাফিক রুল মেনে চললে আর গাড়ি কম বের করলে যানজট তো থাকে না। গাড়িতেও চড়বেন, একেকটি পরিবার দু-তিনটি গাড়ি বের করবেন আবার ট্রাফিক জ্যাম হলে গালি দেবেন, এটা তো চলবে না।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যাতে বেশি কষ্ট না পায়, সে পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে। মোটা চালের দাম এখন ৪৬ টাকার মতো, সেটা খুব বেশি বাড়েনি। চিকন ও মাঝারি চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। আলু পাইকারি বাজারে ২০ টাকা খুচরা বাজারে ২৫ টাকা। পেঁয়াজের দামের জন্য এখন কৃষক হাহাকার করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে জিনিসের দাম বেড়েছে। রড-সিমেন্টসহ প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, সব দেশে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ার জন্য আমেরিকার অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এক ডলারের তেল চার ডলার হয়ে গেছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপে সাড়ে সাত ভাগের ওপরে মূল্যস্ফীতি। বাংলাদেশে ৬ ভাগের নিচে আছে মূল্যস্ফীতি। তিনি বলেন, এই করোনার ধাক্কার মধ্যেও বাংলাদেশ ৬ দশমিক ৯৪ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। মাথাপিছু আয়ও বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৫১১ মার্কিন ডলার হয়েছে। জিনিসের দাম বাড়লেও মানুষের আয় বেড়েছে। দারিদ্র্যসীমাও হ্রাস পেয়েছে।