রাজধানীসহ সারাদেশে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন শত শত রোগী। শুষ্ক মৌসুমে জীবাণুমুক্ত পানি ও খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সারাদেশে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৬২ হাজার রোগী। এর মধ্যে গত ১৬ মার্চ থেকে প্রতিদিনই আইসিডিডিআর,বিতে ভর্তি হচ্ছেন দিনে এক হাজারের বেশি। বর্তমানে এ সংখ্যা ১২০০ কিংবা ১৩০০। অতিরিক্ত রোগীর চাপে সাড়ে ৩০০ শয্যা সক্ষমতার বাইরে দুটি তাঁবু বসিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিস্থিতি সামাল দিতে।
আইসিডিডিআর,বির চিকিৎসকরা বলছেন, এত বিপুল সংখ্যক রোগীর চাপ প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে কখনও দেখা যায়নি। আর ভর্তি হওয়া রোগীদের প্রায় ৩০ শতাংশ কলেরায় আক্রান্ত।
এক মা বলেন, আমার ছেলে ১৩ বার ওয়াশরুমে গিয়েছে। সেই সঙ্গে ছয়বার বমি করেছে। এখন কথা বলতে পারছে না। দুর্বল হয়ে গেছে।
ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে নরসিংদীতে প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ জন রোগী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে দৈনিক গড়ে ২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেককেই পাঠাতে হচ্ছে ঢাকায়। গত দুই সপ্তাহে জেলায় তিনজন মারা গেছেন এ রোগে।
গত মার্চ মাসে ৩ হাজার ৫৫৫ জন ডায়রিয়া রোগী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। রয়েছে শয্যা সংকটও। প্রাথমিকভাবে একে কলেরা টাইপ ডায়রিয়া বলছেন সিভিল সার্জন।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার বলেন, বেশিরভাগ রোগী পানিশূন্যতা নিয়ে আসছেন। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, ডায়রিয়াটা অনেক মারাত্মক। এটা কলেরার মতো ডায়রিয়াও হতে পারে।
গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝালকাঠিতেও বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন নারী ও শিশুরা। সোমবার সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৩ জন রোগী।
জেলার সিভিল সার্জন শিহাব উদ্দিন জানান, আক্রান্তের হার আগের চেয়ে বেড়েছে। রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, গত এক মাসে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঁচ শতাধিক রোগী ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হন।
এদিকে তীব্র গরম আর ডায়রিয়ায় এই সময়ে রোজা রাখার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ফল, পানীয় শাকসবজি, প্রোটিন জাতীয় খাবার যাতে থাকে, তা নিশ্চিত করতে বললেন পুষ্টিবিদরা।
পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো বলেন, যেহেতু ১৪ ঘণ্টা রোজা রাখতে হচ্ছে, সে কারণে শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা দেয়। এজন্য ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পানির স্বল্পতা পূরণের চেষ্টা করতে হবে। একই সঙ্গে বিশুদ্ধ পানি কি না সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।