ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জের সুরমা নদী হয়ে ঢলের পানি ধেয়ে আসছে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলগুলোতে। প্রবল গতিতে জেলার সবচেয়ে বড় ধনু নদ ও কংশ নদীর পানি বেড়েই চলেছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে নদীতে হঠাৎ করে ১০ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে যায়। এখন নদীর পানি বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বিভিন্ন স্থানে পানি উপচে নষ্ট হচ্ছে তীরবর্তী জমির ধান ও বিভিন্ন জাতের সবজি ঘের। এতে হাওরবাসীর একমাত্র ফসল হারানোর চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, নদীর চরে বাদাম, শসা তরমুজ ক্ষেত ছিল। সব নদীতে চলে গেছে। বেশি পানি হলে বেড়িবাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এ ছাড়া ধান সাদা হয়ে যাচ্ছে, কাঁদতেও পারছি না। ২০ কাঠা ক্ষেতে মাত্র ৮-১০ মণ ধান হয়েছে। আট দিন আগে থেকে পানি বাড়া শুরু হয়। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে পানির স্রোত বেড়েছে।
এ ব্যাপারে খালিয়াজুরী চাকুয়া ইউনিয়নের পিআইসি সদস্যরা সুকুমার সরকার বলেন, নদীর পাড়ের জমির তলিয়ে গেছে। পানি আরও বেড়ে গেলে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে পড়বে। এ ছাড়া ঝুঁকি কমাতে নদীতে বাঁশ কাঠ বস্তা দিয়ে আমরা পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন: বিপদসীমার উপরে বরিশালের সব নদীর পানি
নেত্রকোনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত বলেন, নেত্রকোনায় পানি গত দুদিন স্থিতিশীল ছিল। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে হঠাৎ করে পানি বেড়ে যায়। সকালে হঠাৎ ১০ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে যায়। এখন নদীর পানি ৫৮ সেন্টিমিটার বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জেলায় ৩৬৫ কিলোমিটারের মধ্যে ১৮৩ কিলোমিটার বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ করেছি। এ ছাড়া বন্যা মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত। আমরা মাঠপর্যায়ে টিম গঠন করেছি। তারাই সার্বক্ষণিক বাঁধ তদারকি করছে। উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কাজ করছি। তা ছাড়া এগুলো মূল হাওরের বাইরের অংশ। এসব এলাকা অল্পতেই ডুবে যায়। আমাদের মূল হাওর নিরাপদে রয়েছে বলে জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, জেলার ১০টি উপজেলার মাঝে হাওরবেষ্টিত ৬টি উপজেলায় ১৩৪টি হাওরে ডুবন্ত বাঁধ রয়েছে ৩৬৫ কিলোমিটার। এ বছর ২৩ কোটি ৬ লাখ টাকা বায়ে ১৮৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মেরামত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।