পুলিশের ইউনিফর্ম পরে রাজধানীর ফার্মগেটে কলেজের এক শিক্ষিকাকে ‘ইভটিজিং’ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। তবে সেই পুলিশ সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকার বয়ান মতে, পুলিশ সদস্যের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির নম্বর ১৩৩৯৭০। মুখে দাঁড়ি আছে। শিক্ষিকার ধারণা মতে, তিনি মাঝ বয়সী। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকা রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
তাতে তিনি বলেন, শনিবার সকালে তিনি তার কর্মস্থল তেজগাঁও কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক বাসা থেকে রিকশাযোগে ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনে নামেন। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে (আনুমানিক সকাল ৮টা ২০ থেকে ৮টা ৩৫) তেজগাঁও কলেজের দিকে এগোতে থাকেন। তখন সেজান পয়েন্টের সামনে একজন পুলিশ (পোশাক পরিহিত, মোটরসাইকেল নং ১৩৩৯৭০) স্টার্ট বন্ধ রাখা মোটরসাইকেলের ওপর বসেছিলেন। তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ সদস্য শিক্ষিকার কপালের টিপ নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এ সময় সেই শিক্ষিকা পিছন ফিরে গিয়ে তাঁর আচরণের প্রতিবাদ করলে পুনরায় গালিগালাজ করেন। এরই একপর্যায়ে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে তিনি শিক্ষিকার গায়ের উপর দিয়ে চালিয়ে দিয়ে প্রাণনাশের চেষ্টা করেন। শিক্ষিকা সরে গিয়ে প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত বাইকের নিচে পড়ে গিয়ে শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
ঘটনাটি ঘটার পর রাস্তার ঠিক বিপরীত পাশে কর্তব্যরত ৩ জন ট্রাফিক পুলিশের কাছে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সবকিছু বর্ণনা করেন। এই ৩ জনের একজনের নাম ‘অভিজিৎ’। তিনি শিক্ষিকাকে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন।
বিকেলে ফার্মগেটে গিয়ে জানা যায়, কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য অভিজিৎ সকালে ডিউটি করে চলে গেছেন।
অভিযোগ পাবার পর শেরেবাংলা নগর থানা থেকে সকালে অভিযোগকারী শিক্ষিকাকে নিয়ে ফার্মগেটে যান শেরে বাংলানগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুব। তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ওসি অপারেশন স্যারকে অবহিত করা হয়েছে। মিডিয়াকে তিনি বিস্তারিত বলবেন।
ওসি অপারেশন শাহজাহান মণ্ডলকে ফোন করা হলে তিনি সময় সংবাদকে জানান, ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ এখনো পাওয়া যায়নি। আশেপাশের দোকান সে সময় বন্ধ ছিল। তাই পুলিশ সদস্যকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষিকার স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক মলয় বালা বলেন, তারা এ বিষয়টি নিয়ে মামলা দায়ের করবেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকার নাম ড. লতা সমাদ্দার। তিনি তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক পদে কর্মরত।