মেক্সিকাকে কাঁদিয়ে ডাচদের উৎসব

Slider অর্থ ও বাণিজ্য খেলা টপ নিউজ সারাবিশ্ব

50436_Sp
গ্রাম বাংলা ডেস্ক:
ম্যাচের বাকি তখন ২ মিনিট। ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকা ডাচদের অসাধারণ এক গোল করে সমতা ফেরানোর পর স্নাইডারের বাঁধভাঙা উল্লাস : এএফপি
আপন ভূমিতে এসেও অচেনা নেদারল্যান্ডস! তাদের পূর্বপুরুষদেরই তৈরি ‘ডাচ ফোর্ট’ বর্তমান ব্রাজিলের ফোর্টালেজা। ৪০০ বছর আগে ডাচরা বিজয়ী হিসেবেই প্রবেশ করেছিল এখানে। পূর্বপুরুষদের ভূমিতে পার্সি-রোবেন ও স্নাইডারদের জ্বলে উঠাই ছিল প্রত্যাশিত। কিন্তু ঘটল সম্পূর্ণ উল্টোটা। চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে বিধ্বস্ত করে শিরোনামে উঠে আসা ডাচদের খুঁজেই পাওয়া গেল না মেক্সিকোর বিপক্ষে প্রায় পুরোটা ম্যাচেই। সব বিচারেই প্রতিপক্ষের চেয়ে এগিয়ে ছিল নেদারল্যান্ডস। এরপরও শেষ ষোল থেকে তাদের বিদায় একপর্যায়ে সময়ের ব্যাপারেও পরিণত হয়!
ততক্ষণে এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে কম বেতনের কোচ মিগুয়েল হেরেরার মেক্সিকোর উৎসবের প্রস্তুতিও প্রায় শেষ! তবে হাল ছাড়েনি ডাচরা। চলতি টুর্নামেন্টে দুই বার পিছিয়ে পড়েও জয়ের রেকর্ড ছিল তাদের। শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পুরস্কারও ডাচরা পেল গতকাল পূর্বপুরুষের ভূমিতে। নির্ধারিত সময় শেষ হতে তখন বাকি মাত্র ২ মিনিট।
মুহূর্তের ম্যাজিকেই পুরো ম্যাচের চিত্রনাট্য বদলে দেন অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার ওয়েসলি স্নাইডার। ৮৮ মিনিটে তার অসাধারণ গোলে সমতায় ফেরা নেদারল্যান্ডস টুর্নামেন্টের সবচেয়ে নাটকীয় জয়ও পেল মেক্সিকোর বিপক্ষে।
ব্রাজিলের পূর্বাঞ্চলীয় শহর ফোর্টালেজায় ৪ মিনিটের শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ডাচরা ২-১ গোলে মেক্সিকোকে হারিয়ে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের তৃতীয় দল হিসেবে উঠল কোয়ার্টার ফাইনালে। ৬ মিনিটের ইনজুরি সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে প্রতিপক্ষকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে দেন বার্য়ান মিউনিখের তারকা ফুটবলার আর্জেন বোরেন। ডি-বক্সে মধ্যে তাকে অবৈধভাবে বাধা দেন মেক্সিকোর অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার রাফায়েল মার্কুয়েজ। রেফারি পেনাল্টির আদেশ দিতে দ্বিধা করেননি।
বদলি হিসেবে মাঠে নামা ডাচ স্ট্রাইকার জন কাস হান্টলার ঠাণ্ডা মাথার শটে গোল করে উৎসবে মাতিয়ে তোলেন ডাচদের। ওদিকে কান্নায় ভেঙে পড়েন মেক্সিকোর ফুটবলার ও ভক্তরা। কেউ কেউ তো নির্বাকও বনে গেলেন। চোখে অশ্রু নিয়ে একে অপরের মুখের দিকে চেয়ে রইলেন। কিন্তু সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা খুঁজে পাননি। ডাচদের এ নিয়ে বিশ্বকাপে মেক্সিকোর দ্বিতীয় রাউন্ডে বিদায়ের তালিকা আরো দীর্ঘ হলো। টানা ষষ্ঠ বারের মতো তারা বিদায় নিলো নকআউট স্টেজের শুরুতেই। তবে আগের পরাজয়ের তুলনায় ডাচদের কাছে হারটি হয়তো সবচেয়ে বেশি দিন কাঁদাবে মেক্সিকানদের। প্রথমার্ধের পুরো সময় দলটি অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে কোণঠাসা করে রাখল ব্রাজিল বিশ্বকাপের সবচেয়ে আলোচিত দল নেদারল্যান্ডসকে। বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগও সৃষ্টি করল।
তবে গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় ডাচরা গোল হজম না করেই বিরতিতে যেতে সক্ষম হয়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লিড পেল মেক্সিকো। একক প্রচেষ্টায় দৃষ্টিনন্দন গোল করেন ইউরোপীয় কাব ফুটবলের আলোচিত তারকা ডস স্যান্টোস। টুর্নামেন্টে এটি তার প্রথম গোল। দুই বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার পর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে গোল পান ডস স্যান্টোস। তার এই গোলের লিড অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত ধরে রেখেও জয় বঞ্চিত হলো মেক্সিকো। তাদের কান্নার সাগরে ভাসিয়ে ৪ মিনিটের নাটকীয়তায় ডাচরা কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার বাঁধভাঙা উৎসবে মেতে উঠল পূর্বপুরুষদের ভূমি ফোর্টালেজায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *