বাংলাদেশকে নিয়ে আর কোনো খেলা কেউ খেলতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারপ্রধান আরও বলেছেন, দেশবাসীর ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সুযোগ নেই।
শনিবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সমাপনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমরা দুই বোন আমাদের আপনজনকে হারিয়েছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কী হারিয়েছিল? বাংলাদেশের মানুষের সব আশার প্রদীপ নিভে গিয়েছিল। যে আদর্শ নিয়ে এ দেশের মানুষ সংগ্রাম করেছিল, সে আদর্শ ধূলিস্যাৎ হয়েছিল। ২১ বছর এ দেশের মানুষ অন্ধকারে ছিল। এ সময় বাংলাদেশের ইতিহাস পদদলিত করার চেষ্টা হয়। কিন্তু সত্যের জয় হয়ই। আজ সেটাই হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। মাত্র ৫ বছর ক্ষমতায় ছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর ২০০১ সালে করেছিলাম। এ ছাড়া যদি আমরা বাংলাদেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করি, তবে দেখা যায়, কোনো দিনই ক্ষমতা শান্তিপূর্ণভাবে হস্তান্তর করা হয়নি।
সরকারপ্রধান বলেন, যে উন্নয়নের যাত্রা আমরা শুরু করেছিলাম, ২০০১ সালে যারা সরকারে এসেছিল, তারা থামিয়ে দিয়েছিল। আবারও আমরা একটা অন্ধকার যুগে প্রবেশ করি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় প্রতিবাদ করি। এর ফলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা ক্ষমতায় আসি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল, এ সময় তারা বার বার ভোট দিয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। ফলে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করার সুযোগ পেয়েছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সুযোগ পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের যাত্রা হিসাব করলে ৫০ বছরের মধ্যে ২৯ বছর উন্নয়ন হয়নি। কেবল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ক্ষমতায় ছিলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে তিন উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রা শুরু করেছিলেন। আর ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন এ দেশের মানুষ কিছুটা উন্নয়নের ছোঁয়া পায়। তার পর ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি। এখন আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।
এ সময় অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, সুবর্ণজয়ন্তীর সাফল্যময় পথ ধরেই এগিয়ে যেতে হবে।
এর আগে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন, শিক্ষামন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি এবং মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বক্তব্য দেন।
তাদের পদরচারণায় মুখরিত হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বিগত ৫০ বছরে দেশের উল্লেখযোগ্য অর্জন নিয়ে সাজানো হয় অনুষ্ঠান। শিল্পীদের এ আয়োজনে থাকছে ’৭১ এর অর্জিত স্বাধীনতা, আত্মত্যাগ, জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের মাথা তুলে দাঁড়ানোর গল্প।