বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রান্ত হলেও বাংলাদেশে আজও সত্যিকারের স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। বাংলাদেশকে ভারতের তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শুধু জামায়াতই নয়, জনগণকে আজ সকল মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর (অবঃ) আব্দুল জলিলের লিখিত একটি বই ‘অরক্ষিত স্বাধীনতায় পরাধীনতা’ এতে লেখক যে কথাগুলো উপস্থাপন করেছিলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা অক্ষরে অক্ষরে সত্যে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়ালি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমিরে জামায়াত বলেন, ভারত ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছিল বলে বারবার বলা হয়; কিন্তু এটা বলা হয় না যে, যুদ্ধ পরবর্তীতে ভারত ৯৩ হাজার সামরিক অস্ত্র-সরঞ্জাম তাদের দেশে লুট করে নিয়ে গেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী সরকার মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশ পরিচালনায় কেন ব্যর্থ হলো এবং কেন তাদের রক্ষী বাহিনী গঠন করতে হলো- বিষয়টি জনগণকে বিশেষভাবে ভাবতে হবে। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগ দলীয় করণ করা হয়েছে। আজ সত্যিকারের গণতন্ত্র নেই। জনগণের বাক স্বাধীনতা নেই।
ডা: শফিকুর রহমান বলেন, বর্তমানে সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীর অফিসগুলো স্বৈরাচারী কায়দায় বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। সরকার এবং আ’লীগ দেশ থেকে জামায়াতে ইসলামীকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। কিন্তু কোনো ভাবেই আর্দশবাদী এ দলটিকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। কেয়ারটেকার সরকার প্রশ্নে দেশে বিচার বিভাগীয় যে অ্যামিকাশ কিউরি গঠিত হয়েছিল তাদের কোনো সদস্য কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার কথা কখনো বলেননি। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার আদালতকে ব্যবহার করে গায়ের জোরে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করেছে। এটা ১৯৭৪ সাল পরবর্তী একদলীয় বাকশালের প্রতিচ্ছবি ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
ভার্চুয়ালি আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরী আমির কেরামত আলী। জামায়াতের রাজশাহী মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন মহানগরী নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মহানগরী নায়েবে আমির অধ্যক্ষ সিদ্দিক হোসেন ও সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মন্ডল। এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুল, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক অধ্যাপক সারওয়ার জাহান, যুব বিভাগের সেক্রেটারি জসিম উদ্দীন সরকার প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
এতে সভাপতির বক্তব্যে ড. কেরামত আলী বলেন, দেশের স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে হলে আমাদের সবাইকে ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ আজ এ সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে চায়।