ঢাকা: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ-হরতালের মাঝে ১২ ঘণ্টা হরতাল শিথিল করাকে তেমন একটা ইতিবাচক মনে করছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বরং কোনো কৌশলের অংশ হিসেবে এটা করা হয়ে থাকতে পারে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন।
তবে বিএনপির পরবর্তী পদক্ষেপ দেখে হরতাল শিথিলের বিষয়টি ইতিবাচক কিনা বোঝা যাবে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
সোমবার (৯ মার্চ) বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বিজয় উপলক্ষে মঙ্গলবার (১০ মার্চ) ১২ ঘণ্টার জন্য হরতাল শিথিল করে বিএনপি। ওইদিন (মঙ্গলবার) তারা বিজয় মিছিলের ঘোষণা দেন।
তবে এই বিজয় মিছিলের নামে লক্ষ্মীপুরসহ দেশের কোথাও কোথাও বোমাবাজি ও যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কয়েক জন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, বিএনপি পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করছে, জ্বালাও-পোড়াও করছে, হরতাল দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা হতে দিচ্ছে না, বিশ্ব ইজতেমার সময়ও তারা হরতাল প্রত্যাহার করেনি, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসেও তারা অবরোধ দিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশের বিজয়ে হরতাল শিথিল করা কোনো কৌশলের অংশও হতে পারে। আবার হরতাল শিথিল করে বিজয় মিছিলের নামে যানবাহনে আগুন দিয়েছে, বোমাবাজি করেছে।
তাই এই হরতাল শিথিলকে ইতিবাচকভাবে দেখার মতো কিছু হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তারা।
আওয়ামী লীগের ওই নেতারা আরও বলেন, গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে বিএনপি যে অবস্থানে রয়েছে তা থেকে তারা বেরিয়ে আসতে বাধ্য হবে।
তারা দাবি করে বলেন, টানা অবরোধ-হরতাল অনেক আগেই অকার্যকর হয়েছে। পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। বাধ্য হয়ে তাদেরকে এই অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
হরতাল শিথিল করা ইতিবাচক কিনা জানতে চাওয়া হলে, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলির সদস্য গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, হরতাল শিথিল করা তো কোনো বিষয় নয়, বাংলাদেশ ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছে এ জন্য তারা হরতাল শিথিল করেছে বলছে। কিন্তু বিজয় মিছিল করে তারা আবার বোমা মারছে, বাসে আগুন দিচ্ছে। শুনেছি লক্ষ্মীপুরে তারা বাসে আগুন দিয়েছে। এটা তো ইতিবাচক কিছু হতে পারে না। বিজয়ের জন্য তারা কি সত্যিকারের মিছিল করেছে। সহিংসতার পথ ছেড়ে দিলে অবশ্যই সেটা ইতিবাচক হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিজয়ের কথা বলে ১২ ঘণ্টার জন্য হরতাল শিথিল করায় ইতিবাচকের কিছু নেই। হরতালের জন্য ছেলে মেয়েরা এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারছে না। বিশ্ব ইজতেমায় তারা হরতাল পেছায়নি। তারা পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ হত্যা করছে, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য জ্বালাও-পোড়াও করছে। সেই বাংলাদেশের বিজয়ে তাদের আনন্দিত হওয়ার কি আছে? তারা তো আনন্দিত হবে পাকিস্তানের বিজয়ে।
জানতে চাওয়া হলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, কোন কৌশলে হরতাল শিথিল করেছিলো সেটাতো এখনই বুঝা যাবে না। সব কিছু বাদ দিয়ে যদি রাজনীতিতে ফিরে আসে তাহলে সেটাকে ভাল বলা যাবে। শুভবুদ্ধির উদয় হলে বোমাবাজি ছেড়ে আসতে হবে। তবে জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি যেটা করছে এটা তারা বন্ধ করতে বাধ্য হবে। তারা বুঝতে পেরেছে জামায়াত সুযোগ পেলে খালেদা জিয়াকেও ছাড়বে না। এই ভয়েও তারা ভিত।