নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবির ঘটনায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছেন বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম কুদরত-ই-খোদা।
তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত আর কোন মরদেহ বা নিখোঁজের তথ্য পায়নি।
আমরা মাইকিং করেছি, কিন্তু কেউ অভিযোগ করেনি।
সোমবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, যাত্রীবাহী লঞ্চ এবং মালবাহী কার্গোর সংঘর্ষে আমাদের যে লঞ্চডুবি হয়েছিল, সে ঘটনায় আমরা এখন পর্যন্ত ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করতে পেরেছি। এদের মধ্যে চারজন পুরুষ, চারজন নারী এবং তিনজন শিশু। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েছি। আমাদের এ অভিযানে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা, পুলিশ ফায়ার সার্ভিস, বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌ পুলিশসহ যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সেসঙ্গে এ দুর্ঘটনায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।
ফায়ার সার্ভিসের নারায়ণগঞ্জের উপ সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজকে ফায়ার সার্ভিস থেকেও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত হবে এবং তদন্ত করে আমরা একটি সুপারিশমালা দেব। আমরা ভিডিওটা দেখেছি। সেখানে দেখা গেছে যাত্রবাহী লঞ্চ এবং কার্গো দুটোর মাঝেই একটি প্রতিযোগীতা ছিল। সে কারণেই এ ঘটনাটি ঘটেছে। আমাদের সচেতনতা প্রয়োজন। আমরা যদি সচেতনতার সঙ্গে যার যার দায়িত্ব পালন করি তাহলে আমি মনে করি আমাদের এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।
রোববার (২০ মার্চ) দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর কয়লাঘাট অংশে রুপসী-৯ নামে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় মুন্সিগঞ্জগামী লঞ্চ এমভি আশরাফ উদ্দিন ডুবে যায়।
সোমবার ভোরে লঞ্চটি উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়। এসময় লঞ্চের ভেতরে কোন মরাদেহ পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত লঞ্চডুবির ঘটনায় ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এরা হলেন- সোনারগাঁয়ে হরিয়ান প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা উম্মে খাইরুন ফাতিমা (৪০), মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার উত্তর ইসলামপুর এলাকার জয়নাল ভূঁইয়া (৫০), রমজানবেগ এলাকার আরিফা (৩৫), তার শিশু সন্তান সাফায়েত হোসেন (দেড় বছর), গজারিয়া উপজেলার ইস্পাহানিচর সৃতি রানি বর্মণ, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের আজিজের মেয়ে সালমা (৩৩), একই এলাকার ইউনুস খলিফার মেয়ে ফাতেমা (৭), ডেমরার বাসিন্দা আবব্দুল্লাহ আল জাবের (৩০), ৩ বছরের শিশু আরোহী, মুন্সিগঞ্জের মোসলেম উদ্দিন হাতেম (৫৫) ও একজন অজ্ঞাতপরিচয়।