গায়ে হলুদের দিনে লাশ হলেন কনে কাকলি

Slider নারী ও শিশু


শরীয়তপুর সদর উপজেলার চরপালং এলাকার তরুণী কাকলি আক্তার। গতকাল রোববার ছিল তার গায়ে হলুদ এবং সোমবার বিয়ে। তাই কয়েকদিন ধরেই কনের বাড়িতে ছিল উৎসবের আমেজ। তাতে হঠাৎই নেমে আসে অমানিশার কালো মেঘ। বিয়ের দিনচারেক আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয় কনে কাকলিকে। কিন্তু কোনো কিছুতেই তাকে ফেরানো যায়নি। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রবিবার তিনি মৃত্যুর কাছে হার মানেন। অভিযোগ উঠেছে, বিয়ে করতে না পেরে কাকলির ওপর এ হামলা চালায় স্থানীয় বখাটে জাহিদুল ইসলাম।

পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার চরপালং গ্রামের বাসিন্দা নুরুজ্জামান মাদবরের মেয়ে কাকলি আক্তার। তিনি শরীয়তপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার দাখিল শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। ওই মাদ্রাসারই সাবেক ছাত্র জাহিদুল ইসলাম তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তরুণীর পরিবার তাতে রাজি হয়নি। সম্প্রতি কাকলির অন্যত্র বিয়ে ঠিক হলে ক্ষুব্ধ হয় জাহিদুল।

গত বৃহস্পতিবার রাতে সে ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাকলিকে কোপায়। পরে তার চিৎকারে গ্রামের মানুষ এগিয়ে আসে। পালিয়ে যাওয়ার সময় জাহিদুলকে আটক করে গণপিটুনি দেয় জনতা। খবর পেয়ে পুলিশ দুজনকেই উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাদের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল কাকলিকে। কিন্তু অবস্থার আরও অবনতি হলে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিউতে তাকে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রবিবার ভোরে মৃত্যু হয় কনের। আর এদিনেই তার গায়ে হলুদ হওয়ার কথা ছিল।

কাকলির বড় ভাই ফারুক মাদবর বলেন, ‘আজকে আমার বইনের গায়ে হলুদ ও কালকে বিয়ার কথা ছিল। বইনে আইল লাশ হইয়া। জাহিদুল আমার বইনেরে সব সময় বিরক্ত করত। তাই আমরা অল্প বয়সে অরে বিয়া দিতে চাইছিলাম। তাও পারলাম না খুনি জাহিদুলের লাইগা। আমাগো মতো জানি কারো পরিবারে এমন ঘটনা না ঘটে, তাই এই খুনির বিচার চাই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহিদুলের পরিবারের কোনো সদস্য মন্তব্য করতে রাজি হননি। পালং মডেল থানার ওসি মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘ওই হামলার ঘটনায় কাকলির ভাই ফারুক মাদবর একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। কিন্তু কাকলি মারা যাওয়ায় ওই মামলাটি এখন হত্যামামলায় পরিণত হবে। আর হত্যাকারী যেহেতু চিকিৎসাধীন, সে যেন পালিয়ে না যেতে পারে, তাই তাকে পুলিশি প্রহরায় রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *