নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (২১ মার্চ) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে লঞ্চটি উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার কাশিপুর খালের উত্তর পাড়ে রাখা হয়েছে। উদ্ধারের পর লঞ্চটির ভেতরে কোনো মৃতদেহ পাওয়া যায়নি।
দুর্ঘটনা কবলিত লঞ্চটি উদ্ধার হওয়া এবং লঞ্চের ভেতরে আর কোনো মৃতদেহ না পাওয়ায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিআইডাব্লুইটিএ-এর জনসংযোগ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রোববার (২০ মার্চ) রাত পৌনে ১০টার দিকে উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে রাতের মতো তল্লাশি অভিযান স্থগিত রাখেন উদ্ধারকর্মীরা।
রোববার দুপুরে কয়লাঘাট এলাকায় পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল আফসারউদ্দীন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর ২টার দিকে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনাল থেকে মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করে লঞ্চটি। কয়লারঘাট এলাকায় লঞ্চটিকে পেছন থেকে কয়েকটি ধাক্কা দেয় পণ্যবাহী একটি জাহাজ।
ফুটেজে স্পষ্টই বোঝা যায়, ছোট লঞ্চ থেকে ইশারা কিংবা আওয়াজ দিয়ে বারবার জাহাজের নাবিকের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সেই আর্তনাদ হয়তো পৌঁছায়নি। মুহূর্তেই শীতলক্ষ্যায় তলিয় যায় লঞ্চটি। তাৎক্ষণিক যে যার মতো করে ঝাঁপ দিয়ে চেষ্টা করে প্রাণে বাঁচার।
কয়েকজন সাঁতরে তীরে উঠলেও নিখোঁজ অনেকেই। এখন পর্যন্ত নারী-শিশুসহ ৬ জনের লাশ এবং ১৫ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। পরে উদ্ধার অভিযানে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, পুলিও বিআইডাব্লুইটিএ।
অন্যদিকে, এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের মেঘনা নদী থেকে ঘাতক মালবাহী জাহাজকে জব্দ করা হয়েছে। জব্দের পর জাহাজটির বিরুদ্ধে পর নৌ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া, লঞ্চডুবির ঘটনায় মৃতের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা করে দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে বিআইডাব্লুইটিএ।