তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, মোহাম্মদ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী আলেয়া মোহাম্মদ আলীর নামে বরাদ্দকৃত রাজধানীর ধানমণ্ডির একটি বাড়ি তিনি ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে দখল করেছেন। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সোমবার (৯ মার্চ) বিকেলে অনুসন্ধানের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন দুদক চেয়ারম্যান মো: বদিউজ্জামান। তিনি বলেন, প্রয়াত মোহাম্মদ আলীর পরিবার দুদকে সুনির্দিষ্ট একটি অভিযোগ করেছেন। এটা আমলে নিয়ে আমরা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মোহাম্মদ আলীর জন্মস্থান বগুড়ায়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনি ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্য্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তান সরকারের তৃতীয় এই প্রধানমন্ত্রী ১৯৬৩ সালে বগুড়ায় মৃত্যুবরণ করেন।
দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ আলীর ধানমণ্ডির বাড়িটিতে দীর্ঘদিন ভাড়াটিয়া হিসেবে কাজী ফিরোজ রশীদ ও তার পরিবার অবস্থান করছিলেন। একপর্যায়ে জাল কাগজপত্র তৈরি করে নিজের নামে বাড়িটি নিয়ে নেন তিনি।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ধানমণ্ডি-২ এবং গুলশানে অবস্থিত দু’টি বাড়িই প্রয়াত মোহাম্মদ আলীর নামে ছিলো। ধানমণ্ডির বাড়ির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি (আমমোক্তার) দেওয়া হয় তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে আর গুলশানের বাড়ি দেওয়া হয় প্রথম স্ত্রীকে। সে অনুযায়ী মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুর পর ধানমণ্ডির বাড়িটি তার দ্বিতীয় স্ত্রী আলেয়া মোহাম্মাদ আলী পেয়েছেন। এ বাড়িতে কাজী ফিরোজ রশীদ ভাড়াটিয়া হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন।
দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়, ভাড়াটিয়া হিসেবে দীর্ঘদিন অবস্থান করে একপর্যায়ে নিজের নামে জাল কাগজপত্র তৈরি করেন কাজী ফিরোজ রশীদ।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ৩৪ বছর আগে থেকে বাড়িটির বিষয়ে তাদের (মোহাম্মদ আলীর দ্বিতীয় সংসার) সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করা হচ্ছে। তার (মোহাম্মদ আলী) দ্বিতীয় সংসারের সন্তানেরা কানাডায় থাকেন। আমি অনেকবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। তারা সরাসরি এসব বিষয়ের সুরাহা না করে দালালের মাধ্যমে সুরাহা করতে চান। কানাডায় বসে দালালের মাধ্যমে কাজ করালে তো এগুলোর সুরাহা হবে না।
তিনি বলেন, এখন যদি বাড়িটির বর্তমান মূল্য ধরে আমাকে রেজিস্ট্রিতে আসতে বলেন তারা, সেটাতো সম্ভব না। এটা করলে আমার ওপর অবিচার করা হবে।
দুদকে অভিযোগের বিষয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। আইনের মাধ্যমে যা সুরাহা হওয়ার হবে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, এসব অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন দুদকের উপ-পরিচালক জুলফিকার আলী। শিগগিরই দুদকের এ কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফিরোজ রশীদের বক্তব্য জানার জন্য তাকে তলবি নোটিশ পাঠাবেন।