আমির হামজার স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিল

Slider সাহিত্য ও সাংস্কৃতি

ঢাকা: সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হওয়া মো. আমির হামজার পুরস্কার (মরণোত্তর) বাতিল করেছে সরকার। তাকে বাদ দিয়ে শুক্রবার (১৮ মার্চ) পুরস্কার প্রাপ্তদের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২ দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপর আমির হামজার নাম নিয়ে নানা বিতর্ক শুরু হয়।

নাগরিক মহলে সাহিত্য বিভাগে অচেনা আমির হামজার নাম দেখে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন। পরে খবর নিয়ে ‘বাঘের থাবা’, ‘পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি’ ও ‘একুশের পাঁচালি’ নামে তার তিনটি বইয়ের সন্ধান পাওয়া যায়। তার জন্মস্থান মাগুরায়। সেখানে তাকে ‘চারণ কবি’ হিসেবে চিনতেন অনেকে। তিনি গানের আসরে বসে গান লিখতেন সঙ্গে সুরও করতেন।

এছাড়া বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসে, ১৯৭৮ সালে একটি খুনের মামলার প্রধান আসামি ছিলেন আমির হামজা। বিচারিক আদালতের রায়ে ওই মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজা হলেও পরবর্তীতে ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ সাধারণ ক্ষমাও পান তিনি। আমির হামজার ছেলে আসাদুজ্জামান সরকারি কর্মকর্তা। খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন তিনি। ২০১৯ সালে মারা যাওয়া আমির হামজাকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা ছেলের তৎপরতার কথাও আসে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।

পরে বৃহস্পতিবার ‘জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র আহ্বায়ক মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আমিরা হামজার বিষয়ে আসা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে। পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনারও সুযোগ আছে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ শুক্রবার (১৮ মার্চ) জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২ দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে আমির হামজার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২ এর মনোনীত অন্যান্যরা হলেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধ ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা (বীর বিক্রম), আব্দুল জলিল, সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, মরহুম মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস ও মরহুম সিরাজুল হক পুরস্কার পাবেন। চিকিৎসাবিদ্যায় অবদানের জন্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ও অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলাম স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। স্থাপত্য ক্ষেত্রে মরহুম স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেনকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। আর গবেষণা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট।

স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক পুরস্কার। সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *