প্রধান বিচারপতি অবসর গ্রহণের পরও মাসিক ৭০ হাজার টাকা করে বিশেষ ভাতা পাবেন। গৃহ পরিচারিকা, গাড়িচালক ও দারোয়ানসহ বিভিন্ন ধরনের সেবার জন্য আমৃত্যু দেয়া হবে এ ভাতা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইনের খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদরে এসব তথ্য জানান।
সচিব বলেন, `একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির সুযোগ সুবিধা দেওয়া হতো। এখন এটিকে আইনে পরিণত করা হচ্ছে। এখানে দুই-একটা জিনিস নিয়ে আসা হয়েছে। পেনশনযোগ্য প্রকৃত কর্মকাল এবং পূর্ণ বেতনে প্রত্যেক ছুটির মেয়াদে ৩০ দিন অথবা প্রকৃতপক্ষে গৃহীত ছুটির পরিমাণ উভয়ের মধ্যে যেটি কম, সেটি অন্তর্ভুক্ত হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, `কোনো অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি তার জীবদ্দশায় গৃহ সহায়ক, গাড়িচালক, দারোয়ান সেবা, সাচিবিক সহায়তা এবং অফিস কাম রেসিডেন্স রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা অবসরের পর বিশেষ ভাতা পাবেন।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, `অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে একটা সার্টেইন পিরিয়ড পর্যন্ত রাষ্ট্রের নিরাপত্তা দেয়া হবে। এটা ক্যাবিনেট আলোচনা করে বলেছে যে, এটা আইনের মধ্যে থাকার দরকার নেই। এটা সরকার মনে করলে এক্সিকিউটিভ অর্ডার দিয়ে তাদের এ সুবিধা দিতে পারবে, এটা আইনে আনা যাবে না। কারণ, অন্যান্য কোনো দেশের আইনে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে অবসরের পর নিরাপত্তা কতদিন দিতে হবে, সেটা নেই।’
সচিব বলেন, ‘কোনো বিচারক পূর্ণ গড় বেতনে ছুটিতে থাকাকালে তাঁর নির্ধারিত মাসিক বেতনের সমহারে ছুটিকালীন বেতন প্রাপ্য হবেন। আর কোনো বিচারক অর্ধ গড় বেতনে ছুটিতে থাকাকালীন আমাদের যে সরকারি কর্মচারীদের বিধান আছে, সে অনুযায়ী তারা ছুটি প্রাপ্য হবেন।’
এ ছাড়া কোনো বিচারক দায়িত্বকালীন আহত হয়ে অক্ষম হলে বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি প্রাপ্য হবেন জানিয়ে সচিব বলেন, ‘এক্ষেত্রে ফান্ডামেন্টাল রুলের ১৯৮৩’র বিধানই যথাসম্ভব প্রযোজ্য হবে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কোনো বিচারক সহিংস ঘটনায় আহত বা নিহত হলে এ বিষয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য বিধান উক্ত বিচারকের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনসহ প্রযোজ্য হবে। আর কোনো বিচারক অবসর গ্রহণকালে ছুটি পাওনা সাপেক্ষে ১৮ মাসের ছুটি নগদায়নের সুবিধা পাবেন।’
ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এতদিন এটা সরকারি কর্মকর্তাদের বেলায় ছিল, সুপ্রিম কোর্টের জাজদের বেলায় ছিল না।’