রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ১৪তম দিন বুধবার। প্রাণহানির খবরের সাথে সাথে আলোচনার খবর মিলছে। দুই দেশের চলমান সংঘাতের মধ্যে দেশ দুটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করতে যাচ্ছেন। এরই মধ্য যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো বিবৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যুদ্ধের ভয়াবহতা তুলে ধরেছেন ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কা। বুধবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি যুদ্ধের ভয়াবহতা, বিশেষ করে নারী ও শিশুর প্রাণহানি নিয়ে কথা বলেন। ওলেনা বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছেন। যদি তাকে থামাতে না পারি, তাহলে বিশ্বে আমাদের কোনো নিরাপদ স্থান থাকবে না।
যুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব শিশু হতাহত হয়েছে প্রথমবার প্রকাশ্যে দেওয়া ওই বিবৃতিতে তাদের নাম প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি। ওলেনা জেলেনস্কা বিবৃতিতে বলেন, ‘ওখটিরকার সড়কে প্রাণ হারিয়েছে আট বছরের এলিস। সে যখন মারা যায় দাদি তাকে রক্ষা করার চেষ্টাও করেছিলেন।’
ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি বলেছেন, ‘কিয়েভে নিজের বাড়িতে গোলাবর্ষণে বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছে শিশু পোলিনা। ধ্বংসাবশেষের আঘাতে প্রাণ গেছে ১৪ বছরের আরসিনির। আরসিনিকে বাঁচানো যায়নি কারণ তখন সেখানে ব্যাপক গোলাগুলি চলছিল। এ কারণে আরসিনির কাছে অ্যাম্বুলেন্স নেয়া সম্ভব হয়নি। রাশিয়া বলছে, তারা বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে না। তাই আমি সবার আগে তাদের হামলায় প্রাণ হারানো শিশুদের নাম বলছি।’
সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং ইউক্রেনের মানুষকে আশ্রয় দেয়ার জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানান ওলেনা জেলেনস্কা। কিন্তু স্বামী প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির মতো তিনিও ইউক্রেনে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তবে ন্যাটো এমন আহ্বানে সাড়া দেয়নি।
ওলেনা জেলেনস্কা আরও বলেন, ‘যাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা আছে তাদের প্রয়োজন আমাদের। আকাশসীমা বন্ধ করুন, স্থল আমরা দেখব।’ তিনি বলেন, ‘এই চিঠির মাধ্যমে আমি গোটা বিশ্বকে জানাতে চাই, এই যুদ্ধ শুধু আমাদের নয়। এই যুদ্ধ ইউরোপের, এই যুদ্ধ হচ্ছে ইইউ সীমান্তের খুব কাছেই। পুতিন পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছেন। আমরা যদি তাকে থামাতে না পারি, তাহলে গোটা বিশ্বে আমাদের কোনো নিরাপদ স্থান থাকবে না।’