দুর্নীতি করে সরকার দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার মিথ্যা কথা বলে, মানুষকে বোকা বানিয়ে নিজেদের দুর্নীতি ও চুরি করে বাংলাদেশকে ফোকলা বানিয়ে দেওয়ার তথ্য ঢাকতে চায়। তারা মিথ্যাচারের কৌশল নিয়েছে। যত কিছু্ই করেন, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে তাদেরকে আটকিয়ে রাখা যাবে না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এভাবে টিকে থাকা যাবে না। মিথ্যা কথা বলে, জনগণকে ভুল বুঝিয়ে, প্রতারণা করে টিকে থাকা যাবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় কী কথা ভেসে আসে? ভেসে আসে, এদের বড় বড় নেতারা- একদম উপর থেকে শুরু করে নিচ পর্যন্ত কীভাবে দুর্নীতি করছে তা আপনারা দেখতে পারছেন। যদি ভালোয় ভালোয় বিদায় নিতে চান তবে দুর্নীতি বন্ধ করেন। তা না হলে আপনাদের পিঠের চামড়া এদেশে থাকবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কথা খুব পরিস্কার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, মজনুসহ (রফিকুল আলম মজনু) সকল রাজবন্দীকে মুক্ত করতে হবে। তাদের মুক্ত করতে হলে আমাদের আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নাই। কঠিন ঐক্য নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী সরকারকে যারা আমাদের সব অর্জনগুলোকে কেড়ে নিয়েছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলো কেড়ে নিয়েছে, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের অর্জনগুলো কেড়ে নিয়েছে তাদেরকে পরাজিত করতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তাদেরকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং একটা নিরপেক্ষ সরকারের হাতে এই সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন করে জনগণের সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা- সেটাই একমাত্র তাদের রক্ষার উপায়, এছাড়া রক্ষা কোনো উপায় নেই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার প্রতিনিয়ত মিথ্যা কথা বলে। তারেক রহমান সাহেব সম্পর্কে ইদানিং শুরু করেছে। উনার জন্য নাকি টাটা (ভারতের টাটা কোম্পানি) তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আসে নাই। আচ্ছা একটা পাগল যে, সেও তো বুঝবে সরকারে ছিলো তখন বিএনপি। তো বিএনপি বিনিয়োগ আনতে চাইবে না কেনো? আমি বলেছিলাম ফোনালাপ যেটা বের হয়ে এসেছে- আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বিনিয়োগ উপদেষ্টার, সেই ফোনালাপে জয়ের (প্রধানমন্ত্রীর ছেলে) কথা বলা হয়েছে। জয়ের একটা প্রজেক্টের ব্যাপারে ওই মন্ত্রী-উপদেষ্টা কথা বলেছেন। আমরা বলেছিলাম, “জনগণ জানতে চাই ওই প্রজেক্টটা কী”, এখানে দুর্নীতির আভাস আছে-ওরা (সরকার) সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের ক্ষতি হচ্ছে, মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে, তারা কষ্ট পাচ্ছে। আজকে পত্রিকায় দেখলাম-এক মন্ত্রী বলেছেন, “মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে।” মন্ত্রী সাহেব আপনাকে প্রথমে শিখতে হবে-দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি আর ক্রয়ক্ষমতা এক কথা নয়। আর যদি ক্রয়ক্ষমতা বেড়েই থাকে সেই ক্ষমতা বেড়েছে আওয়ামী চামচাদের, সাধারণ মানুষের নয়।’
মহানগর দক্ষিনের আহবায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও মহানগর দক্ষিণের ইউনুস মৃধা ও লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির খায়রুল কবির খোকন, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ইশরাক হোসেন, উত্তরের আমিনুল হক, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিমসহ মহানগর নেতারা।